জাগো জবস

নিজের তৈরি কাপড় বিক্রি করে সফল তানিস

জীবনে বড় হতে গেলে মনে সাহস আর চোখে স্বপ্ন থাকতে হয়। আত্মবিশ্বাস আর মনে সাহস থাকলে সাধারণ মানুষও হয়ে উঠতে পারেন অসাধারণ। সফলতার মুখ দেখতে চাইলে পরিশ্রম ও ধৈর্য ধারণের মানসিকতা থাকাও খুব জরুরি। তেমনি একজন মানুষ কে এ তানিস। যিনি শত বাধা উপেক্ষা করে সফল হওয়া একজন নারী উদ্যোক্তা। তার সফলতার গল্প শোনাচ্ছেন শেখ নাসির উদ্দিন—

Advertisement

ফেনী জেলার এক নিভৃত গ্রামে হেসে-খেলে বেড়ে ওঠা এ নারীর স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হওয়ার। কিন্তু সবার সব স্বপ্নই তো আর পূরণ হয় না। মাঝে মাঝে বিফলেও যায়। ফলে তিনিও স্বপ্নের পিছু ছুটতে ছুটতে মাঝপথে গিয়ে স্বপ্নটাকে হারিয়ে ফেলেছেন। তারপরও স্বপ্নবাজ এ তরুণী কখনো থেমে থাকেননি। সব সময় চেষ্টা করেছেন ভিন্ন কিছু করার।

তাই তো কে এ তানিস একসময় ফেনী থেকে চলে আসেন ঢাকায়। ঢাকায় তার চাকরি হয় একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসাবে। বিকেল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত অফিস করেন। এভাবে অফিস করে করে একদিন মাথায় নতুন ভাবনা আসে, নিজেই খুলবেন অনলাইন ব্যবসা।

ফলে অফিসের পরে তার অবসর সময়কে কাজে লাগাতে নেমে পড়েন কাপড় ডিজাইনিংয়ে। ডিজাইন শেষে সেগুলো নিজের হাতে সেলাই করেন। কেননা কৈশোরে মা আর ফুফুর সাথে কাপড় সেলাইয়ের অভিজ্ঞতা আছে তার। আর সেই অভিজ্ঞতা এবার বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান তিনি।

Advertisement

সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আসে সফলতা। যদিও অনেক বাধা টপকে এখানে আসতে হয়েছে তাকে। নিজের ফেসবুক পেজ ‘লুক লাইক বাই তানিস’ এবং গ্রুপ ‘উদ্যোক্তা বাজার ডটবিডি’র মাধ্যমে নিজের নকশার শাড়ি আর নিজের সেলাই করা থ্রি পিস, শিশুদের বিভিন্ন ধরনের জামা-কাপড় বিক্রি করছেন তিনি।

স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তা কে এ তানিস বলেন, ‘মেয়ে বলে নিজের মনোবল দুর্বল রাখলে চলবে না। সবারই আত্মনির্ভরশীল হওয়া দরকার। তাহলে দেশও পরির্বতন হবে। অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো মেয়ে এখন ঘরে বসে ব্যবসা করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন। সেসব ভাবনা থেকেই অফিসের কাজ শেষে বাসায় এসে কাপড় ডিজাইন করা শুরু করি।’

তিনি বলেন, ‘তারপর ডিজাইন করা কাপড় নিজেই সেলাই করে ছবি তুলে ফেসবুক পেজ আর গ্রুপে পোস্ট করি। সেই পোস্ট থেকে ব্যাপক মানুষের সাড়া পাই। বেশি সাড়া পেলে খুবই খুশি খুশি লাগে। তাই তো অফিস শেষ করেই দ্রুত বাসায় চলে আসি। কাজে বসে যাই।’

পুঁজি সম্পর্কে তানিস বলেন, ‘শুরুতে আমার তেমন পুঁজি ছিল না। প্রথমদিকে মাঝে মাঝে যখন ক্ষতি হতো; তখন খুব ভেঙে পড়তাম। তারপর আবার দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ করেছি। আমার নিজের প্রিন্ট করা শাড়ি অনেক সাড়া ফেলে। তারপর একে একে ব্যবসা বাড়তে থাকে। শুধু নিজের তৈরি পোশাক নয়। আমার পেজে মেয়েদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস যেমন- কাচের চুড়ি, গহনা ও রূপচর্চা সামগ্রী বিক্রি শুরু করি।’

Advertisement

এ কাজে আয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রতিমাসে আমার ভালো আয় হয়। পরিবার আমার কাজে সব সময় সহযোগিতা করেছে। তাই আজ আমি সফল হতে পেরেছি। নিজের অনলাইন ব্যবসা আরও বড় করার ইচ্ছে আছে। এ ছাড়া আমার কাজের পাশাপাশি কর্মহীন মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই।’

এসইউ/এএ/এমএস