মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো হচ্ছে- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, চিকিৎসা ব্যতীত বাকি চারটি মৌলিক চাহিদা পূরণ করার জন্য আমাদের প্রতি মাসে বাজেট থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই চিকিৎসা নামক মৌলিক চাহিদার কথা মনে রাখি না। অথচ আমরা যেকোন সময় অসুস্থ হতে পারি, জাগে থেকে অনুমান করা সম্পূর্ণ অসম্ভব।
Advertisement
চিকিৎসা ব্যয় বাবদ যে একটা খরচ আমাদের হতে পারে, সেটা অনেকেরই বিবেচনার বাইরে থাকে। যারা সামান্য বেতনে চাকরি করেন কিংবা আয় সীমিত বা নির্ধারিত, তাদের এই চিকিৎসা ব্যয়ের বিষয়টি সবসময় বিবেচনায় রাখা উচিত।
একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা আরো পরিষ্কার হবে। ধরুণ, আপনার মাসিক আয় ২৫,০০০ টাকা। পরিবারের বাসা ভাড়া, খাদ্য ব্যয়, জামা কাপড় ক্রয় এবং সন্তানের শিক্ষা ব্যয় বাবদ মাসিক ব্যয় হয় ২২,০০০ টাকা। এরপর আপনি সঞ্চয় হিসেবে ৩০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। ভবিষ্যতে যদি কখনো পরিবারের কোন সদস্যের অসুখ-বিসুখ ধরা পড়ে, তখন ডাক্তার, ওষুধ, হাসপাতালের ব্যয়ের জন্য আপনাকে সঞ্চয়ের সেই ৩০০০ টাকা থেকেই খরচ করতে হয়। যেটা অনেক সময় আপনার মনোকষ্টের কারণ হয়ে থাকে। এই জন্য আপনার পরিকল্পনায় একটু পরিবর্তন আনা উচিত।
প্রশ্ন হতে পারে, সেটা কিভাবে?উপরের উদাহরণ থেকে বুঝতে পারলাম, প্রতিমাসে আপনি ২২,০০০ টাকা খরচ করে থাকেন। এই খরচের সাথে প্রতি মাসে অন্তত ৫০০ টাকা কিংবা ১০০০ টাকা আপনি চিকিৎসার জন্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ করুন। এরপর বাকি টাকা আপনি সঞ্চয় করুন। প্রতি মাসে চিকিৎসা খরচ যদি আপনার নাও হয়, তবুও আপনি টাকাটা ভেঙে ফেলবেন না। এটা খরচ হিসেবেই দেখেন এবং টাকাটা আলাদাভাবে রেখে দেন। যদি টাকা খরচ না হয়, ৬ মাস পর আপনি চিকিৎসার খরচের টাকা সঞ্চয়ী হিসাবে জমা রাখতে পারেন। যখনই দরকার হবে, সেই টাকা তুলে নিয়ে চিকিৎসার খরচ বহন করবেন।
Advertisement
এতে করে অনেক সময় ছোটখাটো চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য বাড়তি আর্থিক চাপ তৈরি হবে না, কারো কাছ থেকে ঋণ নিতেও হবে না।
প্রত্যেকের আর্থিক পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনুন। সুস্থতা-অসুস্থতা আমাদের হাতে নেই। চিকিৎসার ব্যয়ের বিষয়ে অবশ্যই আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত। এজন্য চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য ছোট একটা বাজেট রাখুন।
লেখক : অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
এইচআর/এমএস
Advertisement