দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৩৩ জন, মারা গেছে মোট ১৬ হাজার ৯০৯, সুস্থ হয়েছে ৬ লাখ ১১ হাজার ৪৪ জন।
Advertisement
শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাভেলি এমকিজে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৭৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
১ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৩ জন মারা গেছেন। দেশটির প্রাদেশিক হিসেবে ইস্টার্ন কেপে তিনজন, কোয়াজুলু-নাটাল থেকে আটজন, গৌতেং থেকে আটজন, ওয়েস্টার্ন কেপে আটজন, নর্দান কেপে সাতজন এবং ফ্রি স্টেটের প্রভিংসে ৯ জন করোনায় মারা গেছেন।
জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার জনসাধারণের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত পরীক্ষা করা হয়েছে ৬০ লাখ ৭১ হাজার ৫১ জনের। (সর্বশেষ ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)।
Advertisement
প্রাদেশিক হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যান্য প্রদেশের চেয়ে করোনাভাইরাসের গৌতেং (জোহানেসবার্গ) এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখানে ৪ হাজার ২৬০ জন মানুষ মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৩৬৫ জন।
করোনায় মৃত্যু হয়েছে ওয়েস্টার্ন কেপে ৪ হাজার ১৯৬ জন। আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৬০। জোহানেসবার্গকে কোভিড-১৯ হটস্পট হিসেবে ঘোষণা করে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে দেশটির সরকার।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২৭ জন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। মোট বাংলাদেশিদের আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।
এদিকে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে ১ অক্টোবর থেকে অভিবাসন, পর্যটন, স্বাস্থ্য, পরিবহন বিভাগ সর্বসাধরণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
Advertisement
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকিমুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলসহ সীমিত আকারে আফ্রিকার কিছু দেশের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া দেশের নাগরিকদের দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির সরকার।
নিষেধাজ্ঞা তালিকায় ভারত, রাশিয়া, ইরানসহ প্রায় ৬০টি দেশ রয়েছে। যেসব দেশের সাধারণ নাগরিকদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আলবেনিয়া, আর্জেন্টিনা, আর্মেনিয়া, অস্ট্রিয়া, বাহরাইন, বেলজিয়াম, বলিভিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, ব্রাজিল চিলি, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, ক্রোয়েশিয়া, চেকপ্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ইকুয়েডর, ফ্রান্স, জর্জিয়া, গ্রিস, গুয়াতেমালা, গিয়ানা, হন্ডুরাস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ভারত, ইরান, ইরাক, আয়ারল্যান্ড, ইস্রায়েল, জামাইকা, জর্দান, কুয়েত।
এছাড়া লেবানন, লুক্সেমবার্গ মালদ্বীপ, মাল্টা, মেক্সিকো, মোল্দাভিয়া, মন্টিনিগ্রো, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, উত্তর ম্যাসেডোনিয়া, ওমান, প্যালেস্টাইন, পানামা, প্যারাগুয়ে, পরু, পর্তুগাল, পুয়ের্তো রিকো, কাতার, রোমানিয়া, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, সুরিনাম, সুইজারল্যান্ড, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, আমেরিকা ও ভেনিজুয়েলা।
এসব দেশ থেকে শুধু কূটনীতিক, বিনিয়োগকারী এবং পেশাদার ক্রীড়া দল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়াদের সুযোগ দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী নেলাড়ি পানডোর সতর্ক করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসতে হবে। সব ধরনের মিডিয়াম এবং লো রিস্কের দেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণ করার সময় পিসির (পলিমারোজ চেইন প্রক্রিয়া) কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট সাথে থাকতে হবে, যা ভ্রমণকারী ভ্রমণের সময় থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশটিতে আসতে হবে।
ভ্রমণকারীকে অবশ্যই ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স বা হোটেল বুকিং থাকতে হবে। কোনো ভ্রমণকারী বিমানবন্দরে আসার পর আবার পুনরায় ওই ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হবে। এ সময় কোনো যাত্রীর মধ্যে করোনার উপসর্গ পাওয়া গেলে তাকে নিজ খরচে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
এমআরএম/এমকেএইচ