করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে জড়িয়ে ধরবেন বলেছিলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। শুক্রবার (২ অক্টোবর) তার কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া অনুপমের শারীরিক অবস্থা গুরুতর নয়। তবে চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি হবেন তিনি।
অনুম ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতিক। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। এরপর থেকেই নিজের সাবেক নেত্রী মমতাকে নানাভাবে তোপ দাগতে থাকেন অনুপম।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের এক সভায় যোগ দেয়া অনুপমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সভায় স্বাস্থ্যবিধি মানেননি অনুপম ও বিজেপির একাধিক কর্মী।
Advertisement
তখন সাংবাদিকরা তার কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে অনুপম মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে জড়িয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা কোভিড-১৯-এর চেয়েও বড় শত্রুর মোকাবিলা করছেন। তারা মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে লড়াই করছেন। যেহেতু তারা এখনো কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হননি, তাই তারা আর কিছুকেই ভয় পান না।’
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমি সংক্রমিত হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আলিঙ্গন করব। এই রোগে আক্রান্তদের সঙ্গে তিনি খুব খারাপ ব্যবহার করছেন। দেহগুলি কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা মরা কুকুর বা বিড়ালের সঙ্গেও এমনটা করি না।’
অনুপমের এই মন্তব্যে গোটা রাজ্যে বিতর্কের ঝড় ওঠে। পরে শিলিগুড়ি থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগে দায়ের করে তৃণমূলের উদ্বাস্তু নারী সেল। অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা একজন নারী সম্পর্কে অনুপমের এমন মন্তব্য ‘কুরুচিপূর্ণ’।
Advertisement
অনুপমের এ মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘একমাত্র পাগল ও অপ্রাপ্তবয়স্ক লোকেরাই এ ধরনের মন্তব্য করতে পারে। কোনো সুস্থ মানুষ এ মন্তব্য শুনলে বুঝবেন, তিনি (অনুপম) কী ধরনের মানুষ।’
তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি নেতার এ মন্তব্যের নিন্দা করেছে কংগ্রেসও। দলের নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে আমার হাজারো অভিযোগ আছে এবং থাকবে। অভিযোগ ব্যক্ত করার অধিকার আমার আছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করার কোনো অধিকার নেই। একজন নারীর প্রতি বিজেপি নেতার অশালীন মন্তব্য বাংলার তথা ভারতীয় সংস্কৃতির অপমান বলে মনে করি।’
এইচএ/পিআর