আন্তর্জাতিক

জো বাইডেনও কি করোনায় আক্রান্ত?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। স্ত্রীসহ করোনা আক্রান্তের এই খবর নিজেই দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

ওহাইও অঙ্গরাজ্যে মার্কিন নির্বাচনী বিতর্ক শেষে নিউইয়র্কে ফেরার একদিন পর বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একই মঞ্চে বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন দেশটির ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন। ট্রাম্পের করোনা আক্রান্তের খবর আসার পর সার্চ ইঞ্জিন গুগলে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন জো বাইডেন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন কিনা তা জানার জন্য।

এর আগে, বুধবার ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হোপ হিকসের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের সঙ্গে ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এয়ার ফোর্স ওয়ানের বিমানে সঙ্গী ছিলেন হোপ।

ওহাইওতে যাওয়ার সময় ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ এই উপদেষ্টাকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

Advertisement

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ভাইরাসটি কার্যত কাউকেই সংক্রমিত করে না। কিন্তু এমন মন্তব্যের কয়েকদিন পরই করোনায় আক্রান্ত হলেন তিনি। মার্কিন নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে ট্রাম্পের করোনা আক্রান্তের খবরে অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। ট্রাম্প এবং মেলানিয়া ট্রাম্প করোনা পজিটিভ হওয়ার পর কোয়ারেন্টাইনে আছেন। কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিতর্ককারী জো বাইডেনের খবর কি? তিনিও কি করোনায় আক্রান্ত?

চলুন ব্যাখ্যা করা যাক...

ওহাইওতে বিতর্কে যোগ দিতে এয়ার ফোর্স ওয়ানের বিমানে ট্রাম্পের সফরসঙ্গী দলে ছিলেন তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হোপ হিকস। এ সময় তিনি মাস্ক পরেননি। এ ঘটনা মঙ্গলবার রাতের। এখন জানা যাচ্ছে যে, বুধবার হিকসের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিকসের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসার সঙ্গে সঙ্গে তা ট্রাম্প এবং তার পুরো প্রশাসনকে জানানো হয়। কিন্তু হিকসের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর দেশটির সরকার যত সময় ধরে গোপন রাখা যায় নীতি নিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

মার্কিন সিডিসির গাইডলাইন অনুযায়ী, করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

নির্বাচনী বিতর্কের সময় ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরা মাস্ক পরেছিলেন। কিন্তু বিতর্ক চলাকালীন তারা মাস্ক খুলে ফেলেন। এ সময় ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের চিকিৎসকরা তাদের মাস্ক পরার অনুরোধ জানালে তা প্রত্যাখ্যাত হয়।

নিজের নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের অনেক কর্মকর্তা ও স্ত্রী চিল বাইডেনকে নিয়ে বিতর্কে উপস্থিত ছিলেন জো বাইডেন। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, বিতর্কের পুরো সময় বাইডেন, জিল বাইডেন ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা মাস্ক পরেছিলেন। অনেকেই বলছেন, বিতর্কের একই মঞ্চে থেকে যদি হিকস এবং ট্রাম্প করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে জো বাইডেনও ঝুঁকিতে আছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরের পর গুগল ট্রেন্ডে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ জো বাইডেনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে কিনা তা জানতে সার্চ করেছেন। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত) বাইডনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে কিনা সেবিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

Hope Hicks traveled with Donald Trump to the debate. She did not wear a mask that evening. The failure of the Trump administration to take the coronavirus seriously put Joe Biden and countless others in harms way.

— Andrew Weinstein (@Weinsteinlaw) October 2, 2020

হোয়াইট হাউসে নিযুক্ত ও জো বাইডেনের সমর্থক অ্যান্ড্রু ওয়েনস্টেইন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনার হুমকিতে ফেলেছেন বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে গিয়েছিলেন হোপ হিকস। সেদিন সন্ধ্যায় তিনি মাস্ক পরেননি। করোনাভাইরাসকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা জো বাইডেন এবং অন্যান্যদের ক্ষতির মুখে ফেলেছে।

বয়সের কারণে ৭৭ বছর বয়সী জো বাইডেন এবং ৭৪ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে করোনার উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

সূত্র: এপি, রয়টার্স।

এসআইএস/জেআইএম