আইন-আদালত

বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই: ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের পাচঁ জনের বিরুদ্ধে প্রসিকউশনের আনা সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ শুরু করেছেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে আদম আলী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়েছেন। তিনি ট্রাইব্যুনালে তার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চেয়েছেন। মামলার প্রথম সাক্ষী ছিলেন করিমগঞ্জ থানার মো. মেহেদুল আলম।বুধবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।পরে সাক্ষীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।জেরা শেষে মামলার কার্যক্রম আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত। আগামীকাল নতুন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে বলে জানান প্রসিকিউটর রেজিয়া পারভীন চমন।আদম আলী বলেন, শামসুদ্দিনের নেতৃত্বে রাজাকাররা আইলা ও মাধবপুর গ্রাম ঘেরাও করে আমার বাবাসহ অন্যান্য লোকদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করে। তিনি বলেন, তখন রাজাকাররা গ্রামে আক্রমণ চালিয়ে লুটতরাজ করে। মামলার প্রথম সাক্ষী এবং দিতীয় সাক্ষী একই ধরণের বক্তব্য পেশ করেন জবানবন্দি দেয়া্র সময়।  সাক্ষীর জবানবন্দি জেরা পেশ করার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া চমন।অপরদিকে আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান। তিনি সাক্ষীদের জেরার কার্যক্রম শেষ করেন।  এই মামলার পাঁচ জন আসামির মধ্যে অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ কারাগারে। পলাতক বাকি চারজন আসামিরা হলেন- শামসুদ্দিনের সহোদর ভাই সেনাবাহিনীর (অব.)ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ। অন্যজন রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান, আজহারুল ইসলাম ও হাফিজ উদ্দিন। মামলায় কমপক্ষে ৪০ জনকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর।এর আগে গত ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আতাউর রহমান  ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত প্রসিকউটর সৈয়দ হায়দার আলীর কাছে চারশ’ ৫০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে করিমগঞ্জ উপজেলার বিদ্যানগর, আয়লা, ফতেপুর বিল, কিরাটন বিলসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী নিয়ে অত্যাচার নির্যাতনসহ অপরাধ সংগঠনের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালের ৬ জুন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। এক বছর পাঁচ মাস ১৮দিন তদন্ত করে গত ২৪ নভেম্বর তদন্ত শেষ হয়। জেরা শেষে মামলার কার্যক্রম আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযুক্তদের নাসিরউদ্দিন ও শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীদের সহায়তায় হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাচঁটি অভিযোগে তদন্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এফএইচ/জেডএইচ/পিআর

Advertisement