আন্তর্জাতিক

মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে টানা ৪ মাস মুনাফা বাড়ল চীনা ব্যবসায়ীদের

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর অবস্থা যখন নাজেহাল, সেখানে ভাইরাসটির উৎস হয়েও টানা চতুর্থ মাসে মুনাফা বেড়েছে চীনা ব্যবসায়ীদের। রোববার চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবারের আগস্টে চীনা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা বেড়েছে ১৯ দশমিক ১ শতাংশ বা ৬১২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ইউয়ান (৮৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।

Advertisement

গত জুলাইয়ে চীনের শিল্প খাতে বার্ষিক মুনাফা বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ আগস্টে এর পরিমাণ সামান্য কমলেও বার্ষিক হিসাবে টানা চতুর্থ মাসে মুনাফা বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। এনবিএসের তথ্যমতে, গত জুলাইয়ে চীনের কাঁচামাল প্রস্তুতকারকদের মুনাফা বৃদ্ধির হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। আগস্টে সেটি আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময়ে সাধারণ যন্ত্রাংশ প্রস্তুত খাতে লাভ বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। এছাড়া, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ শিল্পের মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।

আগস্ট পর্যন্ত চীনের অর্থনৈতিক হিসাবে রপ্তানি থেকে শুরু করে, পণ্যের মূল্য, উৎপাদন সব দিকেই উন্নতির ধারা চোখে পড়ে। যদিও চাহিদা স্বল্পতা ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে কারখানার কার্যক্রম বৃদ্ধির গতি যথেষ্ট কম।

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কম হয়েছে অন্তত ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থের দিক থেকে এর পরিমাণ প্রায় ৩ দশমিক ৩২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এর মধ্যে প্রথম সাতমাসের অবস্থা ছিল আরও খারাপ। সেসময় প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কমার হার ছিল ৮ দশমিক ১ শতাংশ।

Advertisement

গত বছরের তুলনায় এবারের আগস্ট শেষে চীনা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর দেনা বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। জুলাইয়ে এর হার সামান্য কম ছিল, ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

বার্ষিক হিসাবে, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানের আয় কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে আয় কমার হার ছিল ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশটির বেসরকারি খাতের মুনাফা কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। জুলাই পর্যন্ত হিসাব করলে এর হার দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

একদিকে মহামারির প্রভাব, অন্যদিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তির বিকাশ এবং সস্তা শ্রমের প্রতিযোগিতায় চীন পিছিয়ে পড়লে তা দেশটির অর্থনীতির জন্য ধ্বংসাত্মক হবে বলে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে শিল্পখাতের সংকট কাটাতে পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যেই অর্থনীতির গতি ফেরাতে করছাড়, সুদমুক্ত ঋণ সুবিধার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

Advertisement

সূত্র: রয়টার্স

কেএএ/এমএস