মতামত

উৎসবের দিনই বই পাক শিক্ষার্থীরা

প্রতি বছর জানুয়ারির প্রথম দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে পাঠ্যপুস্তক দিবস পালন করা হয়। নতুন বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীরা হাতে নতুন বই পেলে তারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়। পড়াশোনার প্রতিও আরও বেশি আগ্রহ জন্মে। সে জন্যই পাঠ্যপুস্তক দিবস শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করছে। এ বছরও পহেলা জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক দিবস পালন করা হবে। ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেয়া হবে ২২ কোটি ৯২ লাখ ২ হাজার ৫১৮ সেট নতুন বই। এ এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। জানুয়ারি মাস আসতে বেশি দেরি নেই। তাই সময়মত যাতে শিক্ষার্থীরা বই হাতে পায় সেটি নিশ্চিত করাই হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য এই মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ।জাগো নিউজের এ সংক্রান্ত খবর থেকে জানা যায়, বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) এক ধরনের ‘জরুরি’ অবস্থা জারি করা হয়েছে। সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি প্রতিদিন অতিরিক্ত আরো ৩ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া বই ছাপা মনিটরিং কমিটির ৭৫  কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হবে। মঙ্গলবার সকালে ও বিকালে দুই দফা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ।আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে মোট ২২ কোটি ৯২ লাখ ২ হাজার ৫১৮ সেট বই ছাপাতে হবে। এর মধ্য প্রাথমিকের ১১ কোটি ৪১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৬ সেট বই রয়েছে। সঠিক সময়ে বই ছাপা, সরবরাহ ও কাগজের মান নিশ্চিত করতে ৬টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে দরকষাকষির কারণে প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। যে কারণে আগামী বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। যে কোনো মূল্যে এই শঙ্কা কাটিয়ে উঠতে হবে।সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়েই শিক্ষার্থীদের দুইটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে। সিলেবাসেও এসেছে পরিবর্তন। তথ্যপ্রযুক্তিসহ নিত্য নতুন বিষয় সংযুক্ত করা হচ্ছে সিলেবাসে। পাঠ্যপুস্তকের কাগজের মান বাড়ানো হয়েছে। বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রচ্ছদ, বইয়ের ভেতরের ছবি, অলঙ্করণও আকর্ষণীয় করা হয়েছে। তবে ছাপার মান যদি ঠিক না থাকে সেক্ষেত্রে এগুলো কোনো কাজ দেবে না। এ জন্য ছাপার মান ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া বই বাঁধাই এবং আঠা লাগানোর ক্ষেত্রেও যত্নশীল হতে হবে। মনে রাখতে হবে কমবয়সী শিক্ষার্থীরা এসব পাঠ্যপুস্তক ব্যবহার করে। কয়েকমাস যেতে না যেতেই যদি বই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে তাহলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কোনো শেষ থাকে না। বিনামূল্যের এসব বই বাজারে কিনতেও পাওয়া যায় না।পাওয়ার কথাও নয়।তাই কাগজ, ছাপা, বাঁধাইসহ সবকিছুতে যেন বইয়ের মান ঠিক থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।সসময়মত বই পৌঁছানোর ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। গত বছর এই সময়টায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল। এমনকি পহেলা জানুয়ারি বই উৎসবের দিন হরতাল ডাকা হয়েছিল। এরপরও শিক্ষার্থীরা সময়মত বই পেয়েছে। এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। সুতরাং শিক্ষার্থীরা সময়মত বই পাবে- এমন প্রত্যাশা করা যায় নির্দ্ধিধায়।এইচআর/আরআইপি

Advertisement