ফিচার

করোনা আক্রান্তদের সেবায় একজন মানবিক ডাক্তার

সাজেদুর আবেদীন শান্ত

Advertisement

জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা? বাইরে যেতে পারছেন না? চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন। কার কাছে চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য পাবেন? ফোন দিলেই পাশে পাবেন তাকে। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শুরু করবেন। প্রয়োজনে বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেবেন। তারপর করোনা পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল নেওয়া থেকে শুরু করে রিপোর্ট, চিকিৎসা এবং সুস্থ হওয়া পর্যন্ত তাকে সব সময় পাশে পাবেন।

উপজেলা পরিষদের সহায়তায় হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে তার চেষ্টা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় করোনায় বা করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনের সময় উপস্থিত থেকে দাফন করেন। হাসপাতালে গেলে শত ব্যস্ততার মাঝেও রোগীদের আন্তরিকভাবে সেবা দিতে দেখা যায়। রাত-বিরাতে পরামর্শের জন্য ফোন করলে বিরক্ত না হয়ে হাসিমুখে সাবলীলভাবে পরামর্শ দেন। ডিউটিতে অন্য ডাক্তার থাকলেও তিনি অন্তত দেখে যান রোগীকে। প্রতিনিয়ত ডিউটির বাইরে আউট ডোরে সেবা দিয়ে যান।

যার কথা বলছি, তিনি সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মেহেদী হাসান লেমন। যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের চিকিৎসাসেবায়। তার জন্ম বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা হাফিজার রহমান ও স্কুলশিক্ষিকা হোসনে আরা বেগমের ছেলে তিনি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত সোনাতলায়ই শিক্ষা গ্রহণ করেন। তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বগুড়ার সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে।

Advertisement

এরপর তরুণ এই মেধাবী শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। এরপর সেখানেই অনারারি মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে মা-বাবার ইচ্ছায় নিজ এলাকার মানুষের সেবা দেওয়ার ব্রত নিয়ে ৩৯তম বিসিএসের (স্বাস্থ্য) মাধ্যমে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন।

ডাক্তার মেহেদী হাসান লেমনের বই ‘লং কেসেস ইন মেডিসিন’, ‘কেসেস ইন সার্জারি’, ‘ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন টু অবসটেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকলজি’ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ৩য় থেকে ৫ম সেমিস্টারে পড়ানো হয়। ‘মাস্টার দ্য ওয়ার্ড’ হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার জন্য এবং ‘মাস্টার দ্য চেম্বার’ চেম্বারে রোগীদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারগণ ব্যবহার করে থাকেন।

ডাক্তার মেহেদী হাসান লেমন বলেন, ‘ডাক্তার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর সময় যে শপথ নিয়েছিলাম, তার প্রথম পয়েন্ট ছিল- ‘আমি মানবতার সেবায় সর্বাত্মকভাবে আমার জীবনকে উৎসর্গ করলাম’। শুধু এটুকু সব সময় মাথায় রেখে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করি। সবার কাছে দোয়া চাই, যেন আমি সব সময় একটা কোয়ালিটি সার্ভিস দিয়ে যেতে পারি। অপ্রতুল সুবিধা ও জনবল নিয়ে আমার মত অনেক চিকিৎসকই আন্তরিকভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। জনগণ যেন আমাদের পাশে থাকেন- এ আবেদন করি সব সময়।’

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা।

Advertisement

এসইউ/এএ/এমএস