জাতীয়

বেফাঁস মন্তব্যে বেকায়দায় হানিফ

নানা উসকানিমূলক ও উত্তেজনাকর বক্তব্য দিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের জুড়ি নেই। বিরোধী শিবিরকে ঘায়েল করে বক্তব্য দিয়ে বরাবরই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে থাকতে চাইছেন ১/১১ এর পর হঠাৎ নেতা হয়ে উঠা মাহবুব উল আলম হানিফ।জাগৃতির প্রকাশক নিহত ফয়সাল আরেফিন দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হককে নিয়ে মন্তব্য করায় হানিফ যেন নিজেই এবার বেকায়দায় পড়েছেন। পুত্রহারা বাবার প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন না করে উল্টো তাকে অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে হানিফের দেয়া ওই বক্তব্যকে ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। নিন্দা জানাচ্ছেন হানিফের নিজ দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার উপ-কমিটির এক নারী সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘তার এই বক্তব্যে আমরা হতবাক হয়েছি। পুরো সংগঠন বিব্রত। সব বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে গেলে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবেই’।ওই নারী নেত্রী আরো বলেন, ‘দিনের বেলায় এমন খুনের ঘটনায় পুরো জাতি স্তম্ভিত। আবেগের জায়গা থেকে নিহতের বাবা বিচার নাও চাইতে পারেন। তাই বলে আমি তাকে খুনির কাতারে ফেলতে পারি না। দোষীদের বিচারের স্বার্থে, সংগঠনের স্বার্থে এই ধরনের বক্তব্য পরিহার করা উচিত।’শনিবার দুর্বৃত্তদের হামলায় পুত্র খুন হওয়ার পর অধ্যাপক কাসেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘এই খুনের বিচার আমি চাই না। যারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে ‘রাজনীতি’ করছেন-উভয়পক্ষের শুভবুদ্ধি উদয়ের প্রত্যাশা করছি।’তার বক্তব্যে ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করে ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘হত্যাকারীদের আদর্শে বিশ্বাসী বলেই পুত্র দীপন হত্যার বিচার চাননি বাবা আবুল কাসেম ফজলুল হক। আমি অবাক হয়েছি। আমার মনে হয়, যারা এই খবরটি পড়েছে, সবাই অবাক হয়েছেন। একজন পুত্রহারা পিতা সন্তানের হত্যার বিচার চায় না, এটা বাংলাদেশে প্রথম। পৃথিবীতেও এমনটা আমি দেখিনি’।আওয়ামী লীগ নেতা হানিফের এমন মন্তব্যের পরপরই সমালোচনার ঝড় উঠে। তার বক্তেব্য উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমগুলোও সংবাদ প্রকাশ করতে থাকে। অনলাইন পোর্টালগুলোয় পাঠক প্রতিক্রিয়ায় কড়া সমালোচনা দেখতে পাওয়া যায়। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর টকশোতেও হানিফের ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়।বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জাগো নিউজের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন ‘এই হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে নিহতের বাবাকে নিয়ে যে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তা খুবই দুঃজনক। আমরা অবাক হয়েছি। এতে মূল অপরাধীরাই সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে।’অধ্যাপক কাশেমকে নিয়ে হানিফের করা মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতেও। ফেসবুকে পোস্ট, মন্তব্য এবং নানা ব্যাঙ্গত্মক ছবি প্রকাশ করে হানিফের মন্তব্যের নিন্দা জানাতে দেখা গেছে।জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রভাষ আমীন বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তার ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, এএসএস/একে/আরআইপি

Advertisement