জাতীয়

অনুমতি মিললেও ঝুলে আছে অ্যান্টিজেন টেস্ট

দেশে দ্রুততম সময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমোদন দিলেও এটি চালুর বিষয়ে এখনও নেয়া হয়নি তেমন কোনো উদ্যোগ। কয়টি এবং কোন কোন হাসপাতাল এ পরীক্ষার জন্য ছাড়পত্র পাবে এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদফতর। নির্ধারণ হয়নি এ পরীক্ষার ফিও। ফলে কবে নাগাদ অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা সম্ভব হবে- তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

Advertisement

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদউদ্দিন মিঞা বলেন, ‘মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেও এখন পর্যন্ত অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা সম্ভব হয়নি। কোথায় কোথায় এ টেস্ট হবে, ফি কত টাকা হবে ইত্যাদি বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে অধিদফতরের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত কম খরচে দ্রুততম সময়ে নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে অধিকসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের লক্ষ্যে অ্যান্টিজেন টেস্ট দ্রুত চালু করা উচিত। কারণ এ পদ্ধতিতে পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত রোগী শনাক্ত করা যাবে। এতে কম সময়ের মধ্যে রোগীকে কোয়ারেন্টাইন করা, তার সংস্পর্শে আসা সবাইকে আইসোলেশনে রাখা সম্ভব হবে। ফলে হ্রাস পাবে করোনার সংক্রমণ।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, ‘অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম খরচে ও কম সময়ে অধিক সংখ্যক পরীক্ষা করা যায়। এজন্য এ টেস্টটি দ্রুত চালু করা উচিত। বিশেষ করে যেসব এলাকায় অধিক সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে সেসব এলাকায় এ টেস্ট অধিক কার্যকর হবে।’

Advertisement

গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ডা. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে- সারাদেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের চাহিদার প্রেক্ষিতে অতি অল্প সময়ে করোনা শনাক্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তাবনা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অন্তর্বর্তীকালীন গাইডেন্স অনুসরণ করে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, সরকারি পিসিআর ল্যাব এবং সব স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে অ্যান্টিজেনভিত্তিক টেস্ট চালুর অনুমতি দেয়া হয়।

শর্ত ছিল, যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতরে প্রক্রিয়াধীন কোভিড-১৯ ল্যাব সম্প্রসারণ নীতিমালাটি চূড়ান্ত হলে তা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

অ্যান্টিজেন টেস্ট কী

অ্যান্টিজেন টেস্ট মূলত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য ভাইরাস শনাক্তের জন্য ব্যবহার করা হয়। এ টেস্টের মাধ্যমে বিশেষ ভাইরাল অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়, যা আসলে ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

Advertisement

পিসিআর পদ্ধতিতে খুব অল্প পরিমাণ ভাইরাসও শনাক্ত করা সম্ভব। কারণ এটি ভাইরাসকে বৃদ্ধি করে বা অ্যাম্পলিফাই করে তাকে শনাক্ত করে। অর্থাৎ এ পদ্ধতিতে ভাইরাসের ছোট একটা অংশ বা নিউক্লিয়িক এসিড থাকলেও সেটি শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে সেটি সম্ভব নয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এটি ভাইরাসকে অ্যাম্পলিফাই করে না। এই টেস্টের মাধ্যমে শুধু ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।

পিসিআর টেস্টের তুলনায় অ্যান্টিজেনে খরচ ও সময় অনেক কম লাগে।

এমইউ/এফআর/এমকেএইচ