বুধবার, দুপুর ১২টা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নিরাপত্তারক্ষীরা ভীষণ ব্যস্ত হয়ে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছেন। জরুরি বিভাগের সামনের চত্বরে কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষীকে অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়িসহ সব ধরনের যানবাহন থেকে রোগী নামানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের চলে যাওয়ার জন্য তাগাদা দিতে দেখা যায়। রোগী ও তাদের অভিভাবকসহ কাউকে জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেই দ্রুত সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য করছিলেন তারা।
Advertisement
তাদের এই ব্যস্ততার কারণ একটু পরেই হাসপাতালে আসবেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ স্বাস্থ্য বিভাগের নীতিনির্ধারক কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঢামেক হাসপাতালের ২৩টি উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্যরা বক্তৃতাকালে ঘুরেফিরে বারবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরত্বারোপ করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আন্ডারগ্রাউন্ডে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে এলেন, সেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেই স্বাস্থ্যবিধি মনে চলায় ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা যায়।
জানা যায়, মাস দুয়েক আগেও জরুরি বিভাগের প্রবেশের আগে রোগী ও তাদের স্বজনদের গেটের সামনে স্থাপিত করোনা ডিসইনফেকশন চেম্বার দিয়ে প্রবেশ করে জীবাণুমুক্ত হয়ে তবেই প্রবেশ করতে দেখা যেত। শুধু তাই নয়, জরুরি বিভাগের গেটের সামনে কর্তব্যরত কর্মচারীরা জ্বর পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে সবার শরীরের তাপমাত্রা মাপতেন। কিন্তু এখন জীবাণুমুক্তকরণের চেম্বার ও জ্বর মাপা-এ দুটির কোনোটিরই ব্যবস্থা নেই।
Advertisement
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগের প্রবেশপথে অদূরে স্থাপিত করোনা ডিসইনফেকশন চেম্বারটি শো-পিস হয়ে পড়ে আছে। হাপসাতালে আসা রোগী, তাদের স্বজন, হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কেউ চেম্বারের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করছেন না। যে যার মতো চেম্বারের পাশ দিয়ে হেটে সরাসরি জরুরি বিভাগে প্রবেশ করছেন। হাসপাতালের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবত ডিসইনফেকশন চেম্বারটি ব্যবহৃত হচ্ছে না। তাছাড়া জরুরি বিভাগের বাইরে অনেককেই মাস্ক পরা ছাড়া ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
সরকারি এই হাসপাতালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে উদাসীনতা কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এমইউ/এসআর/পিআর
Advertisement