মুমিন মুসলমানের মৃত্যুর পর সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে জানাজা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে দাফন করা হয়। জানাজার সময় কাতার বেজোড় করতে বলা হয়। কিন্তু জানাজার নামাজে কাতার বেজোড় করা কি ইসলামে জরুরি? এ সম্পর্কে নির্দেশনাই বা কী?
Advertisement
জানাজার সময় অনেকেই কাতার বেজোড় করা জরুরি বলে মনে করেন। আর যদি কাতার জোড় তথা ২,৪, ৬ হয়ে যায়, তবে তা ভেঙে ৩, ৫, ৭ ইত্যাদি বেজোড় কাতার করে দেয়া হয়। আসলে এ ধারণা ঠিক নয়।
কোনো কোনো মানুষের ধারণা, জানাজার নামাজের কাতার বেজোড় হওয়া জরুরি। আবার অনেকে মনে করেন, জানাজার নামাজের কাতার বেজোড় না হলে তা আদায় হবে না! ফলে জানাজার নামাজের কাতার জোড় সংখ্যা হলে তা বেজোড় করে দেন। এভাবে কাতার বেজোড় করায় ইসলামের কোনো নির্দেশনাও নেই।
তবে কাতার বেজোড় করার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের একটি বর্ণনা রয়েছে। তাহলো-হজরত মারসাদ ইবনু আবদুল্লাহ আল-ইয়াযানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, যখন সাহাবি হজরত মালিক ইবনু হুবাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু (কোনো) জানাজার নামাজ আদায় করতেন, তখন লোকজনের উপস্থিতি কম হলে তাদেরকে তিনি ৩ সারিতে ভাগ করতেন। তারপর তিনি বলতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির জানাজার নামাজে তিন কাতার লোক আদায় করেছে, তার জন্য (জান্নাত) অবধারিত হয়েছে।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)
Advertisement
ইসলামিক স্কলাররা এ হাদিসের উপর আমল করতেই জানাজায় আগত মুসল্লির সংখ্যা কম হলে ৩ কাতার করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন। আর তাতেই সমাজে এ বিষয়টি প্রচলিত হয়ে যায় যে, জানাজার কাতার বেজোড় হওয়া জরুরি।
মূলত জানাজার নামাজে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হলে কাতার জোড় হলেও সমস্যা নেই। জানাজাও আদায় হয়ে যাবে। আর জানাজার নামাজের কাতার বেজোড় না হলেও তা আদায় হয়ে যাবে।
তবে জানাজার নামাজে মুসল্লির সংখ্যা কম হলে তাদের তিন সারিতে দাঁড় করানোই উত্তম বলে অনেক কেতাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’ (শরহুল মুনইয়াহ, হালবাতুল মুজাল্লি, ফাতহুল বারি ও রওজাতুত্তালেবিন)
সুতরাং এ হাদিসের ভিত্তিতে কাতার বেজোড় করার বিষয়টি জরুরি বলে প্রমাণিত নয়। তবে মুসল্লির সংখ্যা কম হলে তা ৩ সারিতে বিভক্ত করা মুস্তাহাব আমল হিসেবে প্রমাণিত।
Advertisement
এমএমএস/পিআর