দেশজুড়ে

ট্রেন-ট্রাকের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

নাটোরে ঢাকাগামী আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও পাথর বোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষের ঘটনায় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিলকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাত সোয়া ১টার দিকে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের হুগোলবাড়িয়া রেল ক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড সদস্য ও ট্রেন যাত্রীরা জানান, সোমবার রাত সোয়া ১টার দিকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন নাটোর স্টেশন ছেড়ে আসে। এর অল্প কিছুক্ষণ পরেই নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের হুগোলবাড়িয়া রেল ক্রসিংয়ে গেটের সিগন্যাল না থাকায় সোনা মসজিদ থেকে খুলনাগামী পাথর বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বিকট শব্দে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। এতে ট্রাক ও ট্রেনের অন্তত ২০ যাত্রী আহত হয়। এছাড়া অনেকে ঘুমিয়ে থাকার কারণে দুর্ঘটনার ঝাঁকিতে সিটের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ট্রেনের যাত্রীরা অভিযোগ করেন, রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেটম্যানের অবহেলার কারণে শত শত যাত্রীর প্রাণ ঝরে যেতে পারত।  তারা বলেন, দুর্ঘটনার পরও গেটম্যানকে সেখানে দেখা যায়নি। এমনকি নাটোর রেলস্টেশনে কর্তব্যরত কোনো কর্মকর্তাকেও ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। তারা রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেটম্যানের কর্তব্যে অবহেলার জন্য তার শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। রেল লাইনের উপর ট্রাক ও রেলের বগি বিকল থাকায় উদ্ধারকারী ট্রেন না আসা পর্যন্ত নাটোরের সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঘটনার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি লাইনে স্থাপন করলে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এরপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।দুর্ঘটনা স্থলে উপস্থিত নাটোর সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, রেলক্রসিং গেটের সিগন্যাল না থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছে এবং যাতে তারা নিরাপদে যেতে পারে তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নাটোর রেলস্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী জানান, হুগোলবাড়িয়া রেল ক্রসিংয়ে সুলতান নামের অস্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত (টিএলআর) একজন গেটম্যান দায়িত্বে রয়েছে। তবে ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিল কিনা তা তিনি জানেন না। এছাড়া স্টেশনে রাতের দায়িত্বে ছিলেন ওহিদুর রহমান। তিনি খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে যান।এ ব্যাপারে রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ম্যানেজার আফজাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিলকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ওই রেলক্রসিংয়ে দ্বায়িত্বরত গেটম্যান ভয়ে সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। আর স্টেশন মাস্টারকে ঘটনাস্থলে না পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার অফিস ছেড়ে যাওয়ার কোনো নিয়ম নেই।রেজাউল করিম রেজা/এসএস/পিআর

Advertisement