একাত্তরের সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারকৃত হবিগঞ্জের দুই সহোদর মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের চতুর্থ সাক্ষী সবুজ মিয়া (৫৬) তার জবানবন্দি পেশ করেছেন।তিনি তার জবানবন্দিতে বলেছেন, আমার বড় ভাই আকল আলীকে রাজাকার মহিবুর রহমান বড় মিয়াসহ অন্যান্য রাজাকাররা ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে এবং তাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করে ফেলে দেয়।সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী তার জবানবন্দি পেশ করা সময় এসব কথা বলেন। পরে মামলা আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। জবানবন্দি পেশ করার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুনতাম মাহমুদ সিমন, রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে সাক্ষীকে জেরা করেন অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা ও আব্দুস শুকুর খান।সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে তাকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। পরবতী সাক্ষীর জবানবন্দির জন্য আগামী ১০ নভেম্বর দিন নির্ধারন করা হয়েছে।সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেন, আমার নাম সবুজ মিয়া। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৫৬ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম: পশ্চিম খাগাউড়া, থানা বানিয়াচং, জেলা-হবিগঞ্জ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল আনুমানিক ১১ বছর। তখন আমি এরালিয়া খাড়াউড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। বর্তমানে আমি কৃষিকাজ করি।সাক্ষী বলেন, ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর খুব ভোর বেলায় আমার ভাই আকর আলী ও রজব আলী আমাদের বাড়িতে আসেন। তখন আমার বড় ভাই আকল আলীর প্রথম স্ত্রী ভিংরাজ বিবি, দ্বিতীয় স্ত্রী পুলিশ বিবি তার মেয়ে কামরুন্নেছা, উক্ত রজব আলী ও তার স্ত্রী আমার বড় ভাই আকল আলীর ঘরে যায়।ওই দিন সারা বেলা তারা গোপনে আমার বড় ভাই আকল আলীর ঘরেই অবস্থান করছিল। বিকেল আনুমানিক ৪টায় রাজাকাররা আমার বড় ভাইয়ের ঘর ঘেরাও করে। রাজাকারদের মধ্যে আসামি মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া আসামি আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল হামিদসহ আরো অনেক রাজাকার ছিল।সাক্ষী আরো বলেন, রজব আলী আকল আলীর ঘরের পশ্চিম পাশের দরজা দিয়ে বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় আসামি বড় মিয়া তার হাতে থাকা রাইাফেল দিয়ে গুলি করে সেখানেই তাকে হত্যা করে। রজব আলীর হত্যার পর বড় মিয়া, আসামি আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল হামিদ ও আকল আলীর ঘরে প্রবেশ করে।তারা আকল আলীর চোখ ও হাত বেঁধে টানাহেছড়া করে তাকে ঘর থেকে বের করে বাড়ির উঠানে নিয়ে আসে। পরে আকল আলীকে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে গুলি করে মরেদহ গুম করে ফেলা হয়।এফএইচ/বিএ
Advertisement