প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় এনআইডি করার অভিযোগে করা মামলায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বরখাস্ত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা শারমিন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দু’দিনের রিমান্ড শেষে সাবরিনাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জেল হোসেন শুনানি শেষে তার দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাবরিনাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক মমিনুল ইসলাম। আদালত ডা. সাবরিনার উপস্থিতিতে গ্রেফতার দেখানোপূর্বক পাঁচ দিনের রিমান্ড শুনানির জন্য ৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
Advertisement
আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম উল্লেখ করেন, প্রাথমিক তদন্তে মামলার ঘটনার সঙ্গে ডা. সাবরিনার জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন করা আবশ্যক। যাতে মামলার মূল রহস্য উদঘাটন হবে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাবরিনাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানাচ্ছি। সাবরিনাকে বা কার সহায়তায় মিথ্যা তথ্য প্রদান করে দ্বিতীয়বার এনআইডি নিয়েছেন এবং তার হেফাজতে অন্য কোনো ভুয়া এনআইডি কার্ড আছে কি না, থাকলে তা উদ্ধারসহ প্রকৃত ঠিকানা সংগ্রহ করে যাচাই, মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার চাহিদা মোতাবেক তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে জিজ্ঞাসাবাদসহ সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজন।
৩০ আগস্ট বাড্ডা থানায় ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন গুলশান থানা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মমিন মিয়া। ২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনের ১৪ ও ১৫ ধারায় এ মামলাটি করা হয়।
ইসি সূত্র জানায়, ডা. সাবরিনার দুই এনআইডিতে স্বামীর নাম দুরকম উল্লেখ আছে। একটি এনআইডির চেয়ে অন্যটিতে বয়স কম দেখানো হয়েছে। বর্তমান তার দুটি এনআইডিই ব্লক করে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি টের পাওয়ার পর বিস্তারিত জানতে ইসির কাছে তথ্য চেয়েছে।
অন্যদিকে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে প্রতারণার মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ এনে গত ২৩ জুন তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। মামলায় পেনাল কোডের ১৭০/২৬৯/৪২০/৪০৬/৪৬৬/৪৭১/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে একাধিক ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
Advertisement
উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই দুপুরে সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় করা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
জেএ/এফআর/এমকেএইচ