‘সাঁকোর গ্রাম’ নামে পরিচিত মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের হাজিগাঁও ও কাজীশাল। ওই দুই গ্রামবাসীর বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য সাঁকোই একমাত্র ভরসা। দুটি গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ৩০টির মতো বাঁশের সাঁকো রয়েছে। বর্ষায় সাঁকোই একমাত্র ভরসা এই দুই গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
Advertisement
নদী মাত্রিক মুন্সীগঞ্জ জেলার বেশিরভাগ উপজেলাই নদী-খাল-নালা বিস্তৃত। এরমধ্যে সিরাজদিখান উপজেলায় সবচাইতে বেশি। বর্ষায় ওই দুই গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মানুষ কষ্ট করে সাঁকো দিয়ে পারাপর হয়ে থাকে পুরো মৌসুম জুড়ে। এরমধ্যে বিপত্তি ঘটে বড় সাঁকোগুলো পার হতে গেলে। অনেকে কষ্ট করে পারাপার হতে পারলেও বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে হরহামেশাই সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে অনেক জায়গায়তেই সরকারি রাস্তা ডুবে যায়। তবে এই রাস্তাগুলো যদি ৪ থেকে ৫ ফুট উঁচু করে দেয়া হতো তাহলে চলমান সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেত। বর্ষা মৌসুম ছাড়াও এ রাস্তাগুলো বৃষ্টিতে কাদায় পিচ্ছিল হয়ে যায়। আর রাতে সেটা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
গ্রামাঞ্চল হওয়ায় নেই ল্যাম্পপোস্টের ব্যবস্থা। তাই অন্ধকারে চাঁদের আলোর ভরসাতেই চলতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে অসুস্থ রোগী হাসপাতালে নিতে যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। তাই স্থানীয়দের দাবি উপজেলা প্রশাসন যদি বর্ষা চলে গেলে ছোট ছোট কিছু রাস্তা তৈরি করে দেয় তাহলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসীর বাড়ি ঘর থেকে বের হতে আর কোনো ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
Advertisement
উপজেলার কাজীসাল গ্রামের আল-আমিন শেখ বলেন, বাড়িতে আসতে বাঁশের সাঁকো আবশ্যক। আমরা সাঁকো ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। চেয়ারম্যান মেম্বাররা যদি আমাদের ছোট রাস্তাগুলো করে দেন তাহলে আমাদের বর্ষা মৌসুমে আর কষ্ট করতে হবে না। আমরা এই সাঁকো দিয়ে ৩০টি পরিবারের প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ চলাচল করি।
হাজিগাঁও গ্রামের মমিন বেপারি বলেন, আমাদের গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। অনেকেই আমাদের গ্রামকে সাঁকোর গ্রাম বলে। আমাদের এই গ্রামে প্রায় ৩০টির মতো সাঁকো রয়েছে। এমতাবস্থায় ছোট ও বয়স্ক মানুষদের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়।
উপজেলার কেয়াইন ৮নং ওয়ার্ড সদস্য শাহজাহান বলেন, এখানে বর্ষা এলেই এলাকাবাসীর কষ্ট বেড়ে যায়। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সারাদেশে সড়কের যে ধরনের উন্নয়ন হচ্ছে তা অতীতের সময়ের চাইতে অনেক অনেক গুণ বেশি। তাই এই সকল গ্রামীণ জনপথগুলোতে যাতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে তাই স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কেয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশরাফ আলী বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় হাজীগাঁও ও কাজীশাল গ্রামে সাঁকো বানিয়ে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসীর। বর্ষা এলেই তাদের কষ্ট আরও অনেক বেড়ে যায়। আগামী বর্ষার আগেই যেখানে যেখানে রাস্তা করা যায় সেখানেই নির্মাণ করা হবে রাস্তা। যাতে এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘব হয়।
Advertisement
ভবতোষ চৌধুরী নুপুর/এফএ/পিআর