এখন আমাদের আর হাসপাতালে যেতে হয় না। বাড়ির কাছেই ক্লিনিক। সমস্যা হলে রাতে আপাকে বললেও ছুটে আসেন বাড়িতে। সেবা নিতে আসা রোয়াংছড়ি উপজেলা আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা ম্রাক্রাচিং মার্মা সহজে হাতের কাছে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হতে উপকৃত হতে পারছেন বলে মন্তব্য করেছেন। বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের ফলে দুর্গম এলাকার পাহাড়ের নারীরাও এখন হাতের কাছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন। লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিউর রহমান জাগো নিউজকে জানান, কমিউনিটি হেলথ সেন্টার না থাকলে দুগর্ম এলাকার মানুষরা সঠিক সেবা পেতো না। কমিউনিটি হেলথ সেন্টারগুলোর কার্যক্রম চালু হওয়ায় হাসপাতালে রোগীর ভিড় কমেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে জনপ্রিয় এই স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পটি বন্ধ করে দিলেও পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় জনপ্রিয় এই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে চালু করে কয়েক হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক। যার সুফল ভোগ করছেন গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষ।রাজবিলা ইউপি চেয়ারম্যান ক্যচিংশৈ জাগো নিউজকে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন হওয়ায় দুর্গম এলাকার মানুষরা সেবা পাচ্ছে। না হয় দুর্গম এলাকার মানুষকে সেবা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হতো।সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের সাত উপজেলায় ৮০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিটি ক্লিনিকে এ চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য নিয়োজিত আছেন ৩ জন হেলথকেয়ার প্রোভাইডার। একজন হেলথ প্রোভাইডার সার্বক্ষণিক, একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী সপ্তাহে ৩ দিন করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকেন। কমদং কমিউনিটি ক্লিনিকে এফডব্লিউএ (পরিবার কল্যাণ সহকারী) ইখাইপ্রু মার্মা জানান, কিছুক্ষণ আগেই দুর্গম পাহাড়ি পাড়ায় সেবা দিয়ে আসছি। আপ্রাণ চেষ্টা করছি সেবা দেওয়ার জন্য।সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডাররা শুক্রবার এবং সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উপস্থিত থাকেন। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যার আওতায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের প্রসব-পূর্ব প্রতিষেধক টিকাদানসহ প্রসব-পরবর্তী সময়ে নবজাতকসহ মাকেও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকে যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগের সীমিত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন অনুপ দেওয়ান বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দুর্গম এলকায়ও স্বাস্থসেবা পাচ্ছেন সাধারণ জনগণ। নতুন আরো ১২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শেষ হয়েছে। রোগীদের কাছে ক্লিনিক থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।এমএএস/পিআর
Advertisement