শিক্ষা

চাইলে অনেক পরীক্ষাই স্থায়ীভাবে বাতিল করা সম্ভব

প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেছেন, ‘পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষাই জাতির সর্বনাশ ডেকে আনছে। শিক্ষার প্রায়োগিক ক্ষেত্র সংকুচিত করা হয়েছে নির্মমভাবে। শিক্ষার বাণিজ্য এবং বাণিজ্যিক শিক্ষা মানুষের মুক্তি দিতে পারে না। করোনা মহামারি তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। আমরা বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষার কারণেই আমাদের থমকে যেতে হয়েছে। চাইলে অনেক পরীক্ষাই স্থায়ীভাবে বাতিল করা সম্ভব।’

Advertisement

করোনা মহামারিতে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মূলত উপরে ওঠার সিঁড়ি না। শিক্ষার আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যেখান থেকে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয়। অথচ, সে শিক্ষা আজ বহুদূরে।’

প্রখ্যাত এ কথা সাহিত্যিক বলেন, ‘সময় গড়িয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটল। শিক্ষার ধরন, বিষয়বস্তুরও পরিবর্তন ঘটল। কিন্তু সাধারণ উপলব্ধি থেকে মনে হয়, শিক্ষার অবনমন হয়েছে। এর জন্য এককভাবে কাউকে দায়ী করা যাবে না। সার্বিক ব্যবস্থার অবনতি।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আসল প্রশ্ন হচ্ছে- মানুষকে কী শিক্ষা দেয়া হচ্ছে! শিক্ষা পেয়ে মানুষ ভেতর থেকে শিক্ষিত হন। সামাজিক অগ্রগতির সঙ্গে পরিবর্তন সাধিত হয়। মানুষ মানবিক হওয়ার আলো পায়। অথচ এক আঁধার ঘিরে ধরছে সমাজ-সভ্যতাকে। সমাজ-মানবিকতার প্রশ্নে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।’

এ শিক্ষাবিদ বলেন, ‘বিশাল জনগোষ্ঠীর দিকে তাকালে মনে হবে, আমরা বড় দারিদ্রের মধ্যে আছি। প্রকৃত শিক্ষা থেকে মানুষ বঞ্চিত। অথচ গ্রামের সাধারণ মানুষেরাই আমাদের খাওয়ায়-পরায়। ভদ্রলোকেরা তো আসলে কিছু করে না। অন্তত এটি মনে রাখা উচিত যে, উচ্চবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্তরাও উৎপাদনে সরাসরি সম্পৃক্ত না।’

হাসান আজিজুল হক জাগো নিউজকে আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষদের অজ্ঞ রাখলে সবই নষ্ট হয়। সেখানে গণতন্ত্রও অর্থবহ থাকে না। গণতন্ত্রে স্বৈরতন্ত্র ভর করে। এ কারণে আমি মনে করি, রাষ্ট্রের অন্যত্র ব্যয় কমিয়ে শিক্ষায় ব্যয় আরও বাড়ানো দরকার। অর্থবহ শিক্ষা সর্বস্তরের মানুষে বিরাজ করলে যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব।’

এএসএস/এফআর

Advertisement