ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী একদিকে যেমন জঙ্গি ও উগ্রপন্থীদের দমনের চেষ্টা করছেন অন্যদিকে সরকারেরই কেউ কেউ তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, আমরা সরকারকে সমর্থন দিয়েছি যাতে তিনি জঙ্গিবাদ মৌলবাদ দমন করতে পারেন আর মুক্তমনাদের রক্ষা করতে পারেন। কিন্ত তিনি যদি তা করতে ব্যর্থ হন তবে এখনই সময় বিকল্প কিছু ভাবার ।’মুনতাসির মামুন বলেন, ‘আজ ব্লগার, মুক্তমনাদের হত্যা করা হচ্ছে। পুলিশ তাদের লিখতে মানা করছেন। কিন্ত জঙ্গিরা যখন বাশেঁরকেল্লায় লেখালেখি করেন, তাদের কেউ মানা করে না।’সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন, অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান, ড. রফিকুল্লাহ খান, ড. হাবিবা রহমান, অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান, ড. মিজানুর রহমান, জোনায়েদ সাকী, ডা. ইমরান এইচ সরকার প্রমুখ।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ব্লগার হত্যা শুরু ২০০৪ সাল থেকে। এরমাঝে ২০১৩ সালে হত্যা হয়েছে, ১৪ তে হয়েছে, ২০১৫ সালেও হয়েছে এবং অপরাধীরাও ধরা পড়েছে। কিন্ত তাদের কাউকে কোন বিচারের আওতায় আনা হয়নি। তবে তারা আসলেও এখনো কারাগারে আছে কি না সেটা আমাদের অজানা।’তিনি বলেন, ‘হত্যার পর সরকারের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়, সেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ বিচার বিবেচনাহীন। আমরা ক্ষুদ্ধ, হতাশ। কিন্ত আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। এজন্য সবার আগে তরুণদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।’ড. ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘একে একে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এরা শুধু ব্লগার, লেখক, প্রকাশকেই নয়, যারাই উগ্রবাদী গোষ্টির বিরুদ্ধে সচেতন হচ্ছে তাদেরকে বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে। আমদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য।’তিনি বলেন, ‘আমার দেখতে পারছি যেভাবে হত্যা হচ্ছে তাতে সরকারেরই অনেক কর্মকর্তার বক্তব্য হত্যাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে, উৎসাহিত করছে।’সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায়ের কিছু লোক নতুন ইস্যু পেলেই মন্তব্য করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। শিক্ষিত রুচি কি সেটি তারা বুঝার চেষ্টা করেন না। এসব জায়গায় থেকে উল্টাপাল্টা কথা বলে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষিপ্ত করবেন না।’তারা বলেন, ‘দীপনের বাবা বিচার চান না, এর মাধ্যমে তার অন্তরের ক্ষোভটি প্রকাশ করেছেন। দেশের চলমান অবস্থার জানান দিয়েছেন। অথচ সরকারের দায়িত্বশীলরা এটি নিয়ে উল্টাপাল্ট প্রলাপ বকছেন। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। দীপনের বাবা বিচার চান না, তার স্ত্রী বিচার চান না কিন্তু আমরা বিচার চাই। প্রকৃত খুনীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’এসময় মানববন্ধন থেকে আগামীকালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল হক।কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামীকাল সকাল ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে সকলের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ। এবং দুপুর ১২টায় একই জায়গায় প্রতিবাদী বিক্ষোভ সমাবেশ।এমএইচ/এসকেডি/পিআর
Advertisement