কৃষি ও প্রকৃতি

আগাম শিমে লাভবান নওগাঁর চাষিরা

নওগাঁর বাজারে উঠতে শুরু করেছে আগাম নতুন শিম। আগাম জাতের শিমের ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন এ জেলার কৃষকরা। শিমের আবাদ কৃষকদের কাছে ভাদ্রা শিম (ভাদ্র মাসের শিম) নামে পরিচিত। কৃষকরা জানিয়েছেন, শিমের পোকা দমন করতে গিয়ে লাভের একটি অংশ চলে যায়।

Advertisement

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় প্রায় ৩শ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের শিমের মধ্যে কার্তিকা, কাজলা ও চালতা নামে পরিচিত।

সবুজ পাতার মধ্যে লকলক করছে শিমের শীষ। শীষে ধরে আছে বেগুনি ও হালকা সাদা ফুল। কিছু কিছু শীষে উঁকি দিচ্ছে তরতাজা শিম। আগাম জাতের শিমের আবাদের জন্য জ্যৈষ্ঠ মাসে জমি প্রস্তুত করে রোপণ করতে হয়।

সদর উপজেলা বর্ষাইল ইউনিয়নের ঝিকরা গ্রামের চাষি আজিজার মন্ডল বলেন, তিনি ৮ কাঠা জমিতে ভাদ্র্রা শিমের আবাদ করেছেন। এ পরিমাণ জমিতে শিমের আবাদ করতে তার বাঁশ ৪ হাজার, নিড়ানি খরচ এক হাজার, ওষুধ ৮০০ টাকাসহ প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আগাম জাতের শিম পেতে জ্যৈষ্ঠ মাসে লাগানো হয়েছে। ভাদ্র থেকে মাঘ পর্যন্ত শিম উঠানো হবে। আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে শিম উঠানো শুরু করবো। প্রথম দিকে সাড়ে তিন থেক চার হাজার টাকায় শিমের মণ বিক্রি হয়। যখন শিম ওঠা শুরু হয় তখন দাম একটু কম হয়। তারপরও সর্বনিম্ন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হয়। প্রতি সপ্তাহে এক মণ করে শিম উঠবে। সে হিসাবে মাসে চার মণ। দাম পাওয়া যাবে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

Advertisement

কেশবপুর গ্রামের চাষি সিরাজ বলেন, গত চারদিন আগে ক্ষেত থেকে পাঁচ কেজি শিম তুলেছি। পাইকারি বিক্রি করেছি ১০০ টাকা কেজি দরে। বাজারে শিমের পরিমাণ কম হওয়ায় দামও তুলনামূলক বেশি। ভালো দামের আশায় আগাম জাতের শিমের আবাদ করা হয়।

ঝিকড়া গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন ও আবুল কাশেমসহ কয়েকজন বলেন, তারা আগাম জাতের লাল শিমের আবাদ করেছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শিম ওঠা শুরু হবে। এবার ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে শিম গাছ পচে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আশা করছেন ভালো দাম পাবেন।

নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মফিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বর্ষাইল, তীর্ত্তিপুর ও বক্তারপুর ইউনিয়নে প্রচুর সবজির আবাদ হয়। ধানের পরিবর্তে তারা বেশি লাভের আশায় সবজির আবাদ করেন। আগাম শিমের আবাদ করায় কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। তবে বন্যাকবলিত যেসব এলাকায় পানি নামতে শুরু করেছে সেসব এলাকায় সবজির বীজের প্রণোদনা দেয়া হবে।

আব্বাস আলী/মিজান/এসইউ/এএ/এমএস

Advertisement