ধর্ম

কুরআনুল কারিম : সব সমস্যার সমাধানকারী

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় এ হলো মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমত। আপনার রব নিজ শাসন-ক্ষমতা অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। তিনি পরাক্রমশালী, সুবিজ্ঞ।’ (সুরা নমল : আয়াত ৭৭-৭৮)

Advertisement

পবিত্র কুরআন মহান আল্লাহর বাণী। তাইতো এটি মানুষকে পবিত্র করে। এর মাঝে কোনো স্ববিরোধিতা নেই। যেভাবে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-‘এরা কি লক্ষ্য করে না কুরআনের প্রতি? আর এটা (কুরআন) যদি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কারও পক্ষ থেকে নাজিল হত, তবে এতে অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৮২)

এ আয়াতে কারিমায় বুঝানো হয়েছে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ যদি এ পবিত্র কুরআনের প্রণেতা হতো তাহলে মানুষ এর মাঝে নিশ্চয় অনেক স্ববিরোধী শিক্ষা ও কথা দেখতে পেত কিন্তু পবিত্র কুরআনে কোনো ধরণের স্ববিরোধিতা নেই।

আমরা যেন নিয়মিত ইবাদত-বন্দেগি করি সে সে বিষয়েও আল্লাহ তাআলা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-‘সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম করুন আর ফজরের কুরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কুরআন পাঠ এমন (একটি বিষয়) যে এ সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়া হয়।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৭৮ )

Advertisement

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘তোমরা কুরআন পড়। কারণ কেয়ামতের দিন কুরআন তার তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে।’ (মুসলিম)

পবিত্র কুরআন মানবজাতির জন্য পথ-প্রদর্শক। এতে মানব জীবনের সব সমস্যার সমাধান বিদ্যমান। এটি এমন এক পরিপূর্ণ কিতাব, যার মাঝে আধ্যাত্মিক ব্যাধি থেকে মুক্তিদানকারী ব্যবস্থাপত্রও রয়েছে।

কুরআনে আল্লাহ তাআলা প্রভাতের তেলাওয়াতের মহিমা বর্ণনা করেছেন। এর দু’টি অর্থ হতে পারে। প্রথমত তাহাজ্জুদের নামাজে দাঁড়িয়ে কুরআন পাঠ করা। আর দ্বিতীয়ত ফজরের নামাজ আদায়ের পর কুরআন পাঠ করা। এরূপ কাজ আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়।

যে ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণে তার প্রতিদিনের কাজ শুরু করে তার দিনের বাকি সময়টুকু উত্তমভাবে অতিবাহিত হবে এটাই স্বাভাবিক। আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কুরআন পাঠকারীর জন্য কেয়ামতের দিন কুরআন সুপারিশকারী হবে।

Advertisement

সুতরাং কুরআন ও হাদিসের আলোকেই বুঝা যায়, কুরআন পাঠের গুরুত্ব কত বেশি। তাই আমাদের সবাইকে প্রতিদিন কুরআন তেলাওয়াতে অভ্যস্ত হতে হবে।

কেননা কুরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়নের মাঝেই সব কল্যাণ নিহিত। আমাদের যত ধরণের সমস্যা রয়েছে, তার সব সমাধানও রয়েছে কুরআনুল কারিমে।

আমরা যদি পবিত্র কুরআন স্বচ্ছ হৃদয় নিয়ে পাঠ করি তাহলে অবশ্যই আমরা সব ধরণের পাপ এবং সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবো।

শুধু কুরআন পাঠ করলেই হবে না, এর অর্থ বুঝতে হবে এবং এর উপর যথাযথ আমল করতে হবে। কেননা বলা হয়েছে- এটি মুত্তাকিদের জন্য হেদায়াত বা পথপ্রদর্শক। যারা সৎ নিয়তে এ কুরআন পাঠ করবে তারা অবশ্যই হেদায়াত লাভ করবে এটা আল্লাহ পাকের ওয়াদা।

সম্প্রতি সুইডেনের মালমো শহরে পবিত্র কুরআনের অবমাননা করা হয়েছে। এতে আমাদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে এ ক্ষরণ হওয়াই স্বাভাবিক।

আমাদের উচিত, কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে এ মহাগ্রন্থের অনন্য শিক্ষা বিধর্মীদের সামনে বেশি বেশি তুলে ধরা। পবিত্র কুরআনের প্রচার ও প্রসারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা ঈমানের একান্ত দাবি।

তাই আসুন, আমরা সবাই পবিত্র কুরআন নিয়মিত পাঠ করি এবং কুরআনে আলোয় নিজেদের জীবন গড়ি। বিশ্ববাসীকে পবিত্র কুরআনের আদর্শে জীবন গড়ার আহ্বান জানাই। কুরআনে পথে ও মেতে আহ্বান করি।

আল্লাহ তাআলা বিশ্ববাসীকে পবিত্র কুরআন বুঝার এবং এর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর