জাতীয়

চাকরি দেয়ার নামে বেকার যুবকদের আড়াই কোটি টাকা লুট

গণমাধ্যমের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে সংঘবদ্ধ চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর মগবাজার ও পুরানাপল্টনে চক্রটির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে র‍্যাব-৩ এর একটি দল। আটকরা হলেন- নিউজ ২১ টিভি ও এবি চ্যানেলের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম ও সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্রের মালিক আমেনা খাতুন।

ওই দুই অফিস সিলগালা করেছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ওই অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া নিয়োগপত্র ও জাল সিল জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‍্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

র‍্যাব বলছে, অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাইনবোর্ডে ১০ থেকে ১২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার প্রলোভনে আর্থিক বড় ধরনের প্রতারণা করেছে এই চক্রটি। নিউজ ২১ টিভি, এবি চ্যানেল ও সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্র নামের ভুয়া টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার নাম ব্যবহার করে এক হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

Advertisement

অভিযান শেষে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাইনবোর্ডে স্বাস্থ্য বিভাগ, কারিগরি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বিআইডব্লিটিএ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা করে চক্রটি এক হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যখন আসল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হতো, তখন চক্রটি তাদের অফিসের ঠিকানা দিয়ে তাদের মতো করে বিজ্ঞপ্তি দিতো। তাদের দালাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে হাজার হাজার বেকার যুবককে টার্গেট করতো। এমনকি তারা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ও তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিবের সিল জালিয়াতি করে নিয়োগপত্র দিতো, যা ভুয়া।

পলাশ কুমার বসু আরও বলেন, ব্রাইট অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো দিতো। কিন্তু অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্রের অফিস থেকেই এই প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালানো হতো এবং ভুক্তভোগীরা টাকা লেনদেন করেছেন এই অফিসেই। অভিযানে দেখা যায়, তাদের অফিসের ডায়েরিতে লেখা কবে কার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছে।

তিনি বলেন, এছাড়া সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্রের সারাদেশের বিভাগ, জেলা ও উপজেলার অফিসে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তারা প্রকাশ করেছে, যাতে ৫৭০ জনের নিয়োগ দেয়া হবে। কিন্তু তাদের বিভাগ-জেলা-উপজেলায় কোনো অফিস নেই। এটি মূলত প্রতারণামূলক। তারা এই চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে সারাদেশ থেকে বেকার যুবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। কারো কাছ থেকে চার লাখ, তিন লাখ আবার কারো কাছ থেকে দুই লাখ পর্যন্ত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

Advertisement

জেইউ/এমএসএইচ/এমএস