জাতীয়

অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পুরোনো রূপেই চলছে গণপরিবহন

করোনাকালীন ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে আগের ভাড়ায় ফিরেছে রাজধানীর গণপরিবহনগুলো। শুধু আগের ভাড়াই নয়, আসন পূর্ণ হওয়ার পরও দাঁড়িয়ে ও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলছে বাসগুলো। সেই সঙ্গে আগের মতোই চালক-সুপারভাইজারদের সঙ্গে বাসভাড়া নিয়ে যাত্রীদের বাকবিতণ্ডা লেগেই আছে।

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হবে না’ বিষয়টির কার্যকারিতা সরেজমিনে দেখতে রাজধানীর কয়েকটি রুটে বাসে চলাচল করে এমন চিত্র দেখা যায়।

রাজধানীর আরও কয়েকটি রুটে গণপরিবহনে ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। সকাল ১০টার পর বাড্ডা লিংক রোড থেকে গুলিস্থানের পথে আকাশ সুপ্রভাত নামক একটি বাসে আগের নিয়মে ২০ টাকা ভাড়া নেয়া হলেও দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে অভিযোগও জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

বেসরকারি চাকরিজীবী শহিদুল ইসলাম বলেন, গণপরিবহন ভাড়ার ক্ষেত্রে আগের নিয়মে ফিরেছে ঠিকই, তবে আগের মতোই অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের নিয়মেও ফিরেছে। প্রতিটি বাসেই অতিরিক্ত যাত্রী, যাত্রীতে ঠাসাঠাসি সেই সঙ্গে একটু পর পর যাত্রী তোলা, নামানো নিয়ে আমরা খুবই বিরক্ত।

Advertisement

আকাশ সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের ভাড়া উত্তোলনকারী সুমন আহমেদ বলেন, আমরা আজ থেকে আগের ভাড়া নিচ্ছি। যেই দূরত্বে করোনাকালীন ৩০ টাকা নিতাম সেটা এখন ২০ টাকা করে নিচ্ছি। কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে না। আর সবসময় দাঁড়িয়ে যাত্রী নিচ্ছি না, অফিস টাইমে যাত্রীর চাপ থাকে তখন কিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়েই অন্য যাত্রীরা অভিযোগ তুলছেন। আমরা যখন আসন ফাঁকা নিয়ে চলেছি, তখন তো আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে কেউ এগিয়ে আসেনি।

উল্লেখ্য, এর আগে শনিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, আজ (১ সেপ্টেম্বর) থেকে গণপরিহন আগের ভাড়ায় ফিরে যাবে। তিনি বলেছিলেন, ‘সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং জনস্বার্থ বিবেচনা করে সরকার ১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহনের আগের নির্ধারিত ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

তবে এ ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত সংশ্লিষ্টদের প্রতিপালন করতে হবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, চালকের সহকারী, টিকিট বিক্রয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। হাতধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অর্থাৎ যত সিট তত যাত্রী পরিবহন নীতি কার্যকর হবে। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাতে হবে। ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে হবে।’

তবে আজ প্রথমদিন সরেজমিনে অধিকাংশ বাসের চালক ও সহকারীকে মুখে মাস্ক কিংবা গাড়িতে ওঠার সময় স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে উঠতে দেখা যায়নি।

Advertisement

এর আগে গত ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা বাস পরিষেবাসহ সব বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মোট আসনের অর্ধেক যাত্রীকে নিয়ে যানবাহন চলাচলের শর্ত হিসেবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দেখা যায়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ভাড়াও নেয়া হচ্ছে বর্ধিত হারে। এজন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে বর্ধিত ভাড়া বাতিলের দাবি ওঠে

এএস/বিএ/পিআর