রাজধানীর শাহবাগের একটি ফার্মেসির কর্মচারী শাহ আলম। মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে প্রতিদিন বাসে শাহবাগে আসেন। গত জুন থেকে তিনি ১৫ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা দিয়ে আসছিলেন। করোনার কারণে দুজনের সিটে একজন করে যাত্রী পরিবহনের সরকারি নির্দেশনা থাকায় সঙ্গত কারণেই বাসমালিকরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছিলেন।
Advertisement
ফলে প্রতিদিন আসা-যাওয়ায় তার ৩০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা পরিশোধ করতে হতো। তবে আজ (১ সেপ্টেম্বর) থেকে সরকারি নির্দেশে রাজধানীসহ সারাদেশের গণপরিবহনে আগের ভাড়া চালু হওয়ায় ৬০ টাকার পরিবর্তে তিনি ১৫ টাকা করে আসা-যাওয়ায় ৩০ টাকায় সারতে পারবেন।
মঙ্গলবার সকালে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে শাহ আলম বলেন, করোনার কারণে ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ায় তার মতো অনেকেরই যাতায়াত খরচ দ্বিগুণ লেগেছে। অনেকে দ্বিগুণ ভাড়া হওয়ায় বাসে চড়া বন্ধ করে দেন। এখন আগের ভাড়া ফিরে আসতেই বাসে যাত্রী বাড়ছে।
শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তায় বাসের সংখ্যা বেড়েছে। বাসে যাত্রীর সংখ্যাও বেশি। তবে বাসের সব আসন পূরণ হতে দেখা যায়নি। বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে।
Advertisement
শাহবাগে কর্তব্যরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ বাসে যাত্রী সংখ্যা খুব বেশি না হলেও বেড়েছে। দু-একদিন না গেলে গণপরিবহনে যাত্রী কতটুকু বেড়েছে তা বোঝা যাবে না।
উল্লেখ্য, এর আগে শনিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, আজ (১ সেপ্টেম্বর) থেকে গণপরিহন আগের ভাড়ায় ফিরে যাবে। তিনি বলেছিলেন, ‘সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং জনস্বার্থ বিবেচনা করে সরকার ১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহনের আগের নির্ধারিত ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এ ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত সংশ্লিষ্টদের প্রতিপালন করতে হবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, চালকের সহকারী, টিকিট বিক্রয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অর্থাৎ যত সিট তত যাত্রী পরিবহন নীতি কার্যকর হবে। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাতে হবে। ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে হবে।’
আজ প্রথমদিন সরেজমিনে অধিকাংশ বাসের চালক ও সহকারীকে মুখে মাস্ক কিংবা গাড়িতে ওঠার সময় স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে উঠতে দেখা যায়নি।
Advertisement
এর আগে গত ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা বাস পরিষেবাসহ সব বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যানবাহন চলাচলের শর্ত হিসেবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দেখা যায়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ভাড়াও নেয়া হচ্ছে বর্ধিত হারে। এজন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে বর্ধিত ভাড়া বাতিলের দাবি ওঠে।
এমইউ/বিএ/জেআইএম