বৈশ্বিক করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামরিতে দেশের সার্বিক রফতানি কমলেও পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পাট পণ্যসহ কৃষিপণ্যের রফাতনি বাড়াতে নতুন নতুন বাজার খোঁজার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
Advertisement
সোমবার (৩১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত এক বছরে বিশেষ করে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশের রফতানির কী অবস্থা হলো…ধারণা ছিল ম্যাসিভ ডিজাস্টার হবে। কিন্তু দেখা গেলো এ সময়ে মাত্র ১৫ শতাংশ রফতানি কম হয়েছে। এতদিন আক্রান্ত হওয়ার পরও, গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও মোট রফতানিতে গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম হয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কিন্তু জুটে আবার রফতানি অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের জন্য এটা একটা নতুন দিগন্ত। এ সময়ে পাট পণ্যের রফাতনি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই মন্ত্রিসভা থেকে বিশেষ অবজার্বেশন দেয়া হয়েছে যে, বিশ্ববাজারে পাট ও কৃষিপণ্যের অবদান বাড়াতে হবে।
Advertisement
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, যেহেতু বিশ্ববাজারে জুটের চাহিদা প্রচুর রয়েছে, তাই ক্যাবিনেট থেকে জুটসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যগুলোকে কিভাবে বিশ্ববাজারে এক্সপ্লোর (নতুন নতুন বাজার খুঁজে সম্প্রসারণ) করা যায় সে বিষয়ে কাজ করার জন্য বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তারপরও সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা অন্য জিনিস। সেটা এটার সাথে সম্পর্কিত নয়।
এদিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, নতুন (২০২০-২১) অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ১০ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। অর্জিত এ রফতানি আয় গত অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।
এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ মোট ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার আয় করে; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় ৭ শতাংশ বেশি এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ফলে দেশের রফতানি বাণিজ্যে চামড়াকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে পাট ও পাটজাত পণ্যখাত।
Advertisement
ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর পাট ও পাটজাত পণ্যের মধ্যে কাঁচা পাট রফতানি করে আয় হয়েছিল ১৩ কোটি ডলার। পাটের তৈরি বস্তা, চট ও থলে রফতানিতে আয় হয়েছিল ১০ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। পাটসুতা রফতানি থেকে এসেছিল ৫৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এছাড়া পাটের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি থেকে আয় হয় ১৯ কোটি ডলার।
এমইউএইচ/এসএইচএস/এমএস