একসময় গ্রামবাংলার নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সেই নৌকা বাইচ। তাই তো নৌকা বাইচের পরিবর্তে এখন স্থান করে নিচ্ছে কলা গাছের তৈরি ভেলা বাইচ। দৃষ্টিনন্দন এ ভেলা বাইচ যেন গ্রামবাংলার নতুন উৎসব হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে।
Advertisement
জানা যায়, সম্প্রতি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর উড়ার চর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ভেলা বাইচ। গ্রামের উদ্যমী যুবকরা এ ভেলা বাইচের আয়োজন করেন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তশালীরা। যুবকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শান্তিপূর্ণভাবেই এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজকরা জানান, প্রতিদিন বিকেলে গ্রামের পাশের আড়িয়াল খা নদের শাখায় আনন্দঘন বাইচে আটটি ভেলা অংশগ্রহণ করে। স্থানীয় যুবকরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ভেলা নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি ভেলায় ৬-৭ জন সদস্য অংশ নেন। প্রতিটি ভেলা তৈরি করতে ১০-১২টি কলা গাছের প্রয়োজন হয়।
প্রথমদিকে কয়েকটি পর্বে বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। বাছাই শেষে গত ৩০ আগস্ট বিকেল ৩টায় বাইচের ফাইনাল পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে মোট চারটি ভেলা অংশগ্রহণ করে। এ সময় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। এতে প্রথম হয় ‘দুই সমাজ’, দ্বিতীয় হয় ‘রকেট’ ও তৃতীয় হয় ‘মায়ের দোয়া’। বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে ছাগল (খাশি) এবং অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়।
Advertisement
উৎসবের শুরু থেকেই প্রতিদিন নদীর পাড়ে ভেলা বাইচ দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করেন। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন ভেলা বাইচ দেখতে। ফাইনাল পর্বের উদ্বোধন করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন কালকিনি প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মিন্টু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কায়কোবাদ শামীম, স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম মাতুব্বর, ব্যবসায়ী হানিফ মাতুব্বর। উৎসবের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন হাবিবুর রহমান ঢালী, আ. কুদ্দুস মাতুব্বর, মো. কবির উদ্দিন ও বেলায়েত হোসেন ঢালী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের আয়োজক ইলিয়াছ আহমেদ, শহিদুল ইসলাম ও মমিন উদ্দিন জানান, ‘প্রথমদিকে আমরা ছোট পরিসরে আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু গ্রামের সবার আনন্দঘন অংশগ্রহণে আয়োজনটি বড় হয়ে গেছে। গ্রামের সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে বাইচটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।’
এসইউ/এএ/পিআর
Advertisement