চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩ লঙ্ঘন করে ডিনদের মর্যাদাহানির অভিযোগ উঠেছে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী যেখানে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পরই ডিনদের অবস্থান সেখানে তা না মেনে সিনেট প্রতিনিধি, সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের রাখা হয়েছে। এ নিয়ে শনিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে অনুষ্ঠিতব্য এক জরুরি সভা বয়কটের ঘোষণাও দেন ডিনরা।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে ডিনদের পদমর্যাদা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পরই। এতদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ম মেনে এলেও নতুন উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন ডিন নির্বাচিত হন। এ নিবার্চনে উপাচার্যপন্থীদের ভরাডুবি হয়। এরপর থেকেই নতুন ডিনদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তার। করোনা পরিস্থিতিতেও উপাচার্যের নেয়া কোনো সিদ্ধান্তে ডিনদের না রাখারও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশে করোনাকালীন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা যে একাডেমিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তা কীভাবে পুষিয়ে দেয়া যায় সে বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলকে সুপারিশ প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কমিটি গঠন করতে বলা হয়। সেই লক্ষ্যে গঠিত কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করা হয় শনিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে, যা চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত চারুকলা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
কিন্তু একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এস এম আকবর হোসাইন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে ডিনদের স্থান দুই নং ক্রমিকে থাকার বিধি থাকলেও তা অমান্য করে ৬ নং ক্রমিকে রাখা হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের সরাসরি লঙ্ঘন।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ১৯৭৩-এর সেকশন ১০ এ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যে পদমর্যাদা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যদের পরই ডিনদের অবস্থান। এখন যেহেতু উপ-উপাচার্যই উপাচার্য পদে আসীন তাই উপাচার্যের পরই ডিনদের পদমর্যাদা। ডিনরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত একাডেমিক প্রধান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বেশকিছু একাডেমিক বিজ্ঞপ্তিতে ডিনদের পদমর্যাদা দেয়া হয়েছে সবার ওপরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ডিন জাগো নিউজকে বলেন, উপাচার্য তার উপদেষ্টাদের ওই সভায় উপস্থিত রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি ভঙ্গ করার অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। তিনি ডিনদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন। কারণ ডিনরা আওয়ামীপন্থী হলেও উপাচার্যের পছন্দের লোক নয়। তাই মর্যাদাহানির কারণে আমরা আজকের নির্ধারিত সভা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এস এম আকবর হোসাইন বলেন, কমিটি গঠন করেছেন রেজিস্ট্রার সাহেব। এ বিষয়ে তিনিই ভালো জানবেন।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ফরমেশন অনুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখানে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে বারবার চেষ্টা করেও চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আবদুল্লাহ রাকীব/আরএআর/এমএস