আইন-আদালত

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন

সরকারের নির্বাহী আদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। খালেদার চিকিৎসার জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে এই আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনপত্রটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহাবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান শনিবার (২৯ আগস্ট) জাগো নিউজকে বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ইতোপূর্বে যে ধরনের আবেদনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছিলেন এবারও তার স্থায়ী মুক্তির জন্য সেভাবে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে উন্নত চিকিৎসার জন্য কোনো শর্তারোপ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শুক্রবার আবেদনের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের লিখিত আবেদন আমরা পেয়েছি। তার আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

এর আগে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মার্চ মুক্তি পান খালেদা জিয়া। আবেদনে যুক্তরাজ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তখন তাকে দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার। এবারও বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। 

গত  ২৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয় বলে তিনি জানান।

গত ২৪ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার গুলশানের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ এর উপধারা ১ অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে।

Advertisement

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার শর্তসাপেক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দু’টি শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। সেগুলো হলো- এই সময়ে তার ঢাকায় নিজের বাসায় থাকতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

আইনমন্ত্রী তখন আরো বলেন, ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়া এবং এই সময় বিদেশে না যাওয়ার শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আমি মতামত দিয়েছি। সেই মতামত এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে গেছে।

আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হয়ে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। তার মধ্যে ১১ মাস ধরে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২০০৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ মামলা হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং চ্যারিটেবল ট্রাস্ট সম্পর্কিত দু’টি দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে খালেদা জিয়া কারাভোগ করছিলেন।

এফএইচ/এসএইচএস/জেআইএম