ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠায় প্রতিষ্ঠানটিসহ এর চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেলের পরিচালিত সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিএফআইইউ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চিঠিতে তাদের নামে থাকা সব হিসাব আগামী ৩০ দিন স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।
ব্যাংকগুলোতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-ভ্যালি লিমিটেডের নামে এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, এনআইডি নম্বর- স্মার্ট (২৮০....৭১) ও এমবি মো. রাসেল এনআইডি নম্বর- স্মার্ট (১৪৮...৪৪) এর নামে পরিচালিত সব হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ক্ষমতাবলে পত্র ইস্যুর তারিখ থেকে ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হলো। লেনদেন স্থগিতাদেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা ২০১৯ এর ২৬ (২) ধারা বিধান প্রযোজ্য হবে।
Advertisement
এছাড়া বর্ণিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নামে পরিচালিত হিসাবসমূহের হিসাব খোলার ফরম কেওয়াইসি হিসাব খোলার শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী এবং বর্ণিত সময়ে ওই হিসাবে ৫০ লাখ বা তার বেশি টাকা জমা ও উত্তোলন সংশ্লিষ্ট তথ্য দলিলাদি পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে ই-ভ্যালিসহ ই-বাণিজ্যকে নিয়মের মধ্যে আনতে কাজ শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ই-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মের মধ্যে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধ্য করার তাগিদ দেন।
ই-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে গিয়ে যেন কোনো ভোক্তা প্রতারিত না হয় এদিকে কঠোরভাবে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে নিয়মের মধ্যে থেকে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-ভ্যালির কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে এফটিএ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আবদুছ সামাদ আল আজাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি কাজও শুরু করেছে।
Advertisement
পণ্য কিনলেই অর্থ ফেরতের অস্বাভাবিক ‘ক্যাশব্যাক’ অফার দিয়ে ব্যবসা করছে বাংলাদেশি ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি। ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দেয়া হচ্ছে। একের পর এক চটকদার অফারে হাজার হাজার গ্রাহক আকৃষ্ট হচ্ছেন। ফলে অল্পসংখ্যক গ্রাহক লাভবান হলেও বেশির ভাগই হচ্ছেন প্রতারিত।
এ ধরনের ব্যবসায়িক পলিসি বাজারে ব্যবসার প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে একচেটিয়া (মনোপলি) অবস্থার সৃষ্টি করছে ই-ভ্যালি, যা আইনের বরখেলাপ বলে মনে করছে প্রতিযোগিতা কমিশন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বরাবর চিঠি ইস্যু করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন।
অন্যদিকে ই-ভ্যালির প্রতারণা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক তাদের কার্ডে ই-ভ্যালির পণ্য কেনাকাটা স্থগিত করেছে। বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংক ও দি সিটি ব্যাংক এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের কার্ডে লেনদেন সাময়িক স্থগিত করেছে।
এসআই/এসএইচএস/পিআর