দেশজুড়ে

ভালোবেসে সবই খুইয়েছেন ধর্মান্তরিত নারী

নওগাঁয় প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আদিবাসী এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আল-আমিন মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীম আল রাজী বাবুর বিরুদ্ধে। পত্নীতলায় অবস্থিত ওই মাল্টিপারপাসে গচ্ছিত রাখা ২ লাখ টাকাও ফেরত না দিয়ে কাগজপত্র লোপাট করা হয়েছে। প্রতারণার শিকার ওই কলেজ ছাত্রী সব হারিয়ে পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বর্তমানে অসহায় জীবন যাপন করছেন। সুবিচার পেতে নওগাঁ শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ আদালতে গত ১৮ আগস্ট মামলা করেছেন তিনি।

Advertisement

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার ধামইরহাট উপজেলার পশ্চিম চকভবানী গ্রামের আদিবাসী ওই কলেজ ছাত্রী স্থানীয় একটি কলেজে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পত্নীতলায় আল-আমিন মাল্টিপারপাস কোঅফারেটিভ সোসাইটির এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে একই ম্যাচে ভাড়া থাকতেন। তার সঙ্গে যাতায়াতের সুবাদে ওই মাল্টিপারপাস কোঅপারটিভ সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীম আল রাজী বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এফিডেফিট করে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন তিনি। ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে ওই কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে করার প্রলোভন দিয়ে জেলার মহাদেবপুর ও পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন বাসায় ভাড়া থাকতেন তারা।

সবশেষে তাকে পত্নীতলা উপজেলা সদরে নিজ বাসার একাংশে রাখেন আলীম আল রাজি। প্রতি মাসে তার হাতখরচ বাবদ কিছু টাকা এবং নিয়মিত বাজার সদাই করে দিতেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে তালবাহানা করতেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে কৌশলে তাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। কলেজ ছাত্রী তার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে আলীম আল রাজি যোগাযোগ এবং সবধরনের খরচ বন্ধ করে দেন। এমনকি তিনি মাল্টিপারপাসে যে দুই লাখ টাকা রেখেছিলেন তার কাগজপত্রও লোপাট করে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান আলীম আল রাজি।

ধর্মান্তরিত হওয়ায় একদিকে যেমন বাবা-মার কাছে ফিরে যেতে পারছে না। অন্যদিকে আলীম আল রাজি তাকে গ্রহণও করছে না। স্ত্রীর স্বীকৃতি চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।

Advertisement

এই মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী উপজেলার পাহাড়পুর কাটা বাঁশবাড়ি গ্রামের হারুনুর রশিদ, গগণপুর গ্রামের নেছারুল হক সুপার ও আনন্দপুর গ্রামের মাহফুজুর রহমান এক সময় আলীম আল রাজির পার্টনার হিসেবে আল আমিন মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির সঙ্গে ছিলেন। একজন অসহায় আদিবাসী নারীর সঙ্গে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাদেরকে প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। মামলা দায়ের করায় বর্তমানে আলীম আল রাজি তাদের দোষারোপ করছেন এবং নানাভাবে হুমকি প্রদান করছেন।

অভিযুক্ত আল-আমিন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীম আল রাজী বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার সম্মানহানী করতে কিছু কুচক্রী মহল উঠেপড়ে লেগেছে। অবশেষে একটি মেয়েকে তার পিছনে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।

আব্বাস আলী/এফএ/জেআইএম

Advertisement