যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতন ও জোর করে স্ত্রীর গর্ভের ভ্রূণ নষ্ট করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় র্যাব সদর দফতর থেকে বদলি হওয়া পুলিশের এএসপি নাজমুস সাকিব হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন। তবে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
Advertisement
হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি জাহিদ সরওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ থেকে তিনি জামিন পান। জামিনের বিষয়টি রোববার (২৩ আগস্ট) এএসপি নাজমুস সাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাহজাদুল ইসলাম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গত ১৮ আগস্ট এএসপি নাজমুস সাকিবকে হাইকোর্ট চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। চার সপ্তাহ পর তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’
এর আগে গত ৩ জুন তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী ইসরাত রহমান।
Advertisement
এ বিষয়ে তিনি রমনা থানা পুলিশের কাছে ই-মেইলে অভিযোগ দেয়ার পর গত ৪ মে তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে পুলিশ। এতে যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় স্ত্রীকে দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতন ও জোর করে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ আনেন ভুক্তভোগী স্ত্রী ইসরাত রহমান।
ইসরাতের অভিযোগ, দ্বিতীয়বার গর্ভে কন্যাসন্তান আসার পর বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। সহ্য করতে না পেরে অবশেষে মামলা করেন তিনি। ইসরাতের বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। ২০১৭ সালের মার্চে সাকিবের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বাবার বাড়ি থেকে বিভিন্ন সময় টাকা এনে দেয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করেন স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাড়ি দোতলা করার জন্য ১২ লাখ টাকা দাবি করে না পেয়ে ইসরাতের ওপর বেড়ে যায় নির্যাতন। টাকা না পাওয়ায় তালাকের ভয় দেখিয়ে জোর করে গর্ভপাত করানো হয় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে।
এরপর নানাভাবে চলতে থাকে নির্যাতন। আবারও অন্তঃসত্ত্বা হন ইসরাত। অনাগত সন্তান মেয়ে হবে এই কারণে শ্বশুরবাড়ি থেকে আবারও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন নাজমুস সাকিব। মে মাসের শুরু থেকে নির্যাতনের কারণে দফায় দফায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ইসরাতকে। নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে ক্রসফায়ারেরও হুমকি দেয়া হয়। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানের মাধ্যমে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করেন তিনি।
জানা গেছে, বর্তমানে এএসপি নাজমুস সাকিবকে র্যাব সদর দফতর থেকে পুলিশে বদলি করা হয়েছে।
Advertisement
এফএইচ/এফআর/এমকেএইচ