আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে সিল্ক শিল্প খাতকে ৫০০ কোটি টাকার বাজারে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।শনিবার রাজধানীর মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ‘এক্সপোর্ট পোটেন্সিয়াল অব সিল্ক অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ জানান তিনি। দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ও জার্মানির ফ্রেডরিচ-নাউমান-স্টিফটাং ফুর ডাই ফ্রেইট (এফএনএফ) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী সিল্ক শিল্প খাতটি অর্থনৈতিক মানদণ্ডে এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমানে এ শিল্পের বাজারটি মাত্র সাড়ে সাত কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। আগামী এক বছরের মধ্যে এ শিল্পে ১০০ কোটি টাকার ব্যাংক লোনের সাপোর্ট দেওয়া হবে। আর আগামী দেড় বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের মধ্যে এ খাতকে ৫০০ কোটি টাকার বাজারে উন্নীত করা হবে।’তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সিল্ক শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে এ শিল্পের দিকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সুনজর দেওয়া প্রয়োজন।এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের আমি অনুরোধ করবো আপনারা গার্মেন্টস পণ্যের সঙ্গে সিল্ক পণ্য রফতানির ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে গার্মেন্টস পণ্যেও সিল্কের ব্যবহার করুন।সিল্ক পণ্য উৎপাদনকারীদের উদ্দেশে মাতলুব আহমাদ বলেন, নকলের ভিড়ে আসল সিল্ক হারিয়ে যাচ্ছে। আপনারা আমাদের ভাল মানের পণ্য দিন, আমরা আপনাদের বড় একটি বাজার সৃষ্টি করে দেবো। এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লেয়াকত আলী, সিল্ক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আলাউদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির উপ-উপাচার্য ড. আইয়ুব নবী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি চিফ (বস্ত্র সেল) রুহুল আমিন, ব্র্যাক ও আড়ংয়ের প্রতিনিধি মেজর (অব) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফএনএফ’র কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিভ ড. নাজমুল হোসাইন। এসময় সিল্ক শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা এ শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।বক্তারা বলেন, সিল্ক শিল্পের প্রসার ঘটাতে রোগমুক্ত ডিমের প্রয়োজন, টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট প্রয়োজন, সিল্ক এক্সপোর্টের জন্য ক্যাশ ইনসেনটিভ ও জিএসপি সুবিধার প্রয়োজন। এছাড়া এ শিল্পের প্রসারে পরিকল্পিতভাবে রেশম চাষের প্রয়োজন ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লেয়াকত আলী বলেন, ২০০৫ সালে জাতীয় রেশম নীতি করা হয়েছে, তা এখানো বাস্তবায়ন করা হয়নি। দেশে রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ১১টি বাগান রয়েছে, এগুলো প্রাইভেট সেক্টরে দিতে হবে। প্রয়োজনে এগুলোকে প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে আরো বাণিজ্যিক করে তুলতে হবে। তিনি জানান, এ শিল্পের প্রসারে সারাদেশে অন্তত ৩০ জন উদ্যোক্তা প্রয়োজন। এখন এটি শুধু রাজশাহীর ভোলাহাটে গুটি কয়েকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সারাদেশে এ শিল্পের উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। তাহলেই দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে সিল্ক রফতানি করা যাবে।এসআই/একে/আরআইপি
Advertisement