আইন-আদালত

বিচার বিভাগ নিয়ে স্ট্যাটাস : নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন আইনজীবী

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ বিষয়ে অবমাননাকর স্ট্যাটাস দেয়ার পর ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।

Advertisement

রোববার (২৩ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ তাকে ক্ষমা করে আদেশ দেন। আইনজীবীর আদালত অবমাননার বিরুদ্ধে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেন বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী।

এ সময় আপিল বেঞ্চে (ভার্চুয়াল) যুক্ত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি, আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল।

আইনজীবী রুহুল কুদ্দস কাজল সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আদালত বলেছেন যেহেতু আদালত অবমাননাকারী তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন এবং এই মর্মে তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে তিনি আদালত অবমাননার মতো আর এমন কাজ করবেন না এবং এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবেন, সেটি বিবেচনা নিয়ে মামলার পরবর্তী কার্যক্রম না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছি। তবে, ভবিষ্যতের জন্য অন্যান্যদের স্মরণ করিয়ে দিতে এই মামলায় পরিচালিত অডিও ভিডিও কার্যক্রম ধারণ করা হয়েছে, যা সংরক্ষণ করে রাখা হবে।’

Advertisement

গত ২০ আগস্ট আপিল বিভাগে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এ আইনজীবী। ভবিষ্যতে এ ধরনের পোস্ট দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন এমন অঙ্গীকারও করেন তিনি। পরে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত আপিল বিভাগে আইনজীবী মামুন মাহবুবের পক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির উল ইসলাম, সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।

গত ১১ আগস্ট নিজের ফেসবুক আইডিতে উচ্চ আদালতে ১৮টি বেঞ্চে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ চলা এবং প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। তিনি পোস্টে সীমিত আকারে উচ্চ আদালতে বিচারকাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতির হঠকারিতা বলে উল্লেখ করেন।

১২ আগস্ট বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, এ ধরনের স্ট্যাটাস বিচার বিভাগের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে।

Advertisement

স্ট্যাটাস দেয়ার পর আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুবকে তলব করা হয়। আদালতে উপস্থিত তার বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

গত ২০ আগস্ট ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আপিল বিভাগে হাজির হয়ে প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের বিষয়ে অনুতপ্ত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রোববার (২৩ আগস্ট) এই আদেশের দিন ঠিক করেন। এছাড়া বিরূপ ওই মন্তব্যের কারণে তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না সেই বিষয়ে ১৯ আগস্টের মধ্যে তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়।

এফএইচ/এসআর/এফআর/পিআর/এমকেএইচ