ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানুষ এবং রাজনীতিবিদ। শেখ মুজিব ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত দুটি রাষ্ট্র গঠনের বিপরীতে একটি ভাষাভিত্তিক আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গঠনের দূরদর্শী স্বপ্ন দেখেন। ভাষাভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের ধারণা তখন ইউরোপ, জাপান, কোরিয়া বা চীনের বাইরে প্রসারিত হয়নি। এ অঞ্চলে ভাষা রাষ্ট্র ধারণা ছিল অকল্পনীয় বরং পাকিস্তান ভারত তৈরি হয় সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। ’৪৭ থেকে ’৭১ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জনগণকে সংগঠিত করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনযুদ্ধ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
Advertisement
গতকাল শুক্রবার (২১ আগস্ট) রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব বলেন তিনি।
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর দে। বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সভাপতি সৈয়দ আলী আকবরের সভাপতিত্বে এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি বেগম আখতার জাহান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, গ্রন্থাগার অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুবকর সিদ্দিক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
পূর্ব বাংলাকে নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র গঠনে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব পাশ কাটিয়ে ১৯৪৭ সালে দুটি রাষ্ট্র গঠন ছিল সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, সিলেট পূর্ব বাংলা যাতে খণ্ডিত না হয় তা রুখতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিতে সিলেট গিয়েছিলেন।
’৪৮ সালে তার রাজনৈতিক ধারণা প্রকাশ পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো প্রক্রিয়ায় পাশ কাটিয়ে আন্দোলন করেননি। ’৪৭ থেকে ’৭১ পর্যন্ত জনগণকে সংগঠিত করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতার লড়াই করেছেন। এই ভূ-খণ্ডের গোটা জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্ব অন্ধের মতো অনুসরণ করেছে। জাতির পিতা প্রথমেই একটি জাতি সত্ত্বা গড়ে তুলেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে অসীম দূরদর্শিতার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন। তার নেতৃত্বের গুণাবলি বিশ্বের কোনো নেতা অর্জন করতে পারেননি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা প্রায় বিনা হাতিয়ারে কিংবা হালকা হাতিয়ার নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এ দেশের প্রতিটি মা নিজের সন্তানের মতো করে আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন, খেতে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকুক এ জন্য হাজার হাজার মা-বাবা নামাজ পড়েছেন, রোজা রেখেছেন দোয়া, পূজা ও প্রার্থনা করেছেন। এটা জাতিকে বঙ্গবন্ধুর সুসংগঠিত করার ফসল।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সব স্তরের শিক্ষাকে ডিজিটাল করার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি কম্পিউটার ল্যাব, ক্লাসরুম, পাঠক্রম, পাঠদান পদ্ধতি, পরীক্ষা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণকে ডিজিটাল করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে পাঠাগারগুলোতে ইন্টারনেট সরবরাহ করার অনুরোধ করেন মন্ত্রী।
Advertisement
এমইউএইচ/এফআর/জেআইএম