আন্তর্জাতিক

কমলা-ওবামা-হিলারি ত্রয়ীর বাণে বিদ্ধ ট্রাম্প

সপ্তাহখানেক ধরে বিশ্ব রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত নাম কমলা হ্যারিস। বৃহস্পতিবার দলের ভার্চুয়াল সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলেন। বক্তৃতায় রিপাবলিকানদলীয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তথা দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্টকে তুমুল আক্রমণ করেছেন।

Advertisement

একইসঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম নারী হিসেবে ইতিহাস গড়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দুঃখকে তিনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। জো বাইডেন ক্ষমতায় এলে আমাদের সবাইকে একত্রে বেঁধে রাখবেন। সেই সঙ্গেই ট্রাম্প প্রশাসনের নাম না নিয়ে কমলা বলেছেন, ‘জাতিবিদ্বেষের কোনো প্রতিষেধক হয় না।’

গত সোমবার থেকে ডেমোক্র্যাটদের চার দিনের জাতীয় কনভেন শুরু হয়। গত পরশু ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার তোপের মুখে পড়েন। কাল কমলা হ্যারিসের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং গত নির্বাচনের ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের তোপে পড়লেন ট্রাম্প।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প কতটা ব্যর্থ সেই উদাহরণই তুলে ধরেছেন তারা। কমলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে সব জাতি-বর্ণের মানুষ সমানাধিকার পাবে। এই প্রসঙ্গে গত মে মাসে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের অত্যাচারে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু এবং তার পরবর্তী প্রতিবাদ-আন্দোলনের কথাও বলেছেন কমলা।

Advertisement

তবে ট্রাম্পকে আক্রমণ করার পাশাপাশি কিছুটা ভারাক্রান্তও শুনিয়েছে ৫৫ বছরের এই ডেমোক্র্যাট নেত্রীকে। তিনি জানিয়েছেন, মা শ্যামলা গোপালনের কথা মনে পড়ছে তার। এই দিনটা যে তার মা দেখে যেতে পারলেন না, সেই আফসোস কোনও দিনও যাবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এ বারের নির্বাচনে এশীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন কমলা। ট্রাম্পের শাসনামলে দেশের অর্থনীতি যে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এখন তো আমাদের তিনটি বিষয়েরর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। মহামারি, অর্থনীতি আর জাতিবিদ্বেষ।’

নজিরবিহীনভাবে উত্তরসূরী ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বারাক ওবামা বলেন, ‘চার বছর আগে রিপাবলিকানরা যখন ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট মনোনীত করে, ভেবেছিলাম এই পদের গুরুত্ব-মর্যাদা বোঝার মতো কেউ আসছেন। কিন্তু না, আমি ভুল ছিলাম। ট্রাম্প আগেও এই দায়িত্বের গুরুত্ব বোঝেননি। এখনও বোঝেন না।’

একদিকে ওবামা-কমলা যখন একত্রে ট্রাম্পকে আক্রমণ করছেন তখন ট্রাম্প একের পর এক টুইট করে তাদের দুজনকে আক্রমণ করেন। কেনো ওবামা শুরু থেকে বাইডেনের হয়ে প্রচারণা চালাননি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। কমলা যখন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন, একটি বিতর্ক সভায় বাইডেনের সমালোচনা করেছিলেন তিনি।

Advertisement

এ বিষয়টি নিয়েও কমলা হ্যারিসকে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। তিনি তার পূর্বসূরী বারাক ওবামার উদ্দেশে টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি গুপ্তচরবৃত্তি করতে গিয়েছিলেন। আর ধরাও পড়ে যান। এখানে অবশ্য ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারের প্রসঙ্গ তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

গত নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনও ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘আশা করি আমেরিকার মানুষ এতদিনে বুঝতে পেরেছেন, যে এই নির্বাচনটা আর পাঁচটা বছরের মতো নয়। ট্রাম্পও অবশ্য হিলারিকে পাল্টা আক্রমণ করার সুযোগ হাতছাড়া করেননি। হিলারিকে ভয়াবহ নেত্রী আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি, আনন্দবাজার

এসএ/পিআর