ক্যাম্পাস

প্রথমবারের মতো মেয়াদ পূর্ণ করলেন ইবি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইতিহাসে প্রথমবারের মতো উপাচার্যের মেয়াদ পূর্ণ করলেন অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী। আজ ২০ আগস্ট তার পদের মেয়াদ ৪ বছর পূর্ণ হলো। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহাও তার মেয়াদ পূর্ণ করলেন। আজকের মধ্যে সরকারের তরফ থেকে কোনো নির্দেশনা না এলে আগামীকাল থেকে শূন্য হবে গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এসএম আব্দুল লতিফ জানান, ইবি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আজ। গুরুত্বপূর্ণ এ পদ দুটিতে নিয়োগ না হলে আগামীকাল থেকে পদ দুটি শূন্য হয়ে যাবে।

২০১৬ সালের ২১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুন উর-রশিদ আসকারী। বুধবার ছিল বর্তমান প্রশাসনের শেষ কার্যদিবস। এদিনও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে দুটি স্বারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর প্রদান ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়সহ ব্যস্ত সময় পার করেছেন এ দুই কর্তাব্যক্তি। আজ উভয়ের পদের মেয়াদ পূর্ণ হলো। ইবির ইতিহাসে কোনো উপাচার্য তার মেয়াদকাল পূর্ণ করতে পারেনি কিন্তু বর্তমান উপাচার্য তা পূর্ণ করলেন।

মেয়াদ পূর্তিতে উভয়ই নিজ নিজ ফেসবুক ওয়ালে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। উপাচার্য ড. আসকারী তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ‘উপাচার্য হিসেবে আজ আমার শেষ দিন। সরকারের উচ্চ মহল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের কাছে আমার অনিঃশেষ ঋণ। ছাত্রছাত্রীরা আমার সকল প্রেরণার উৎস। তাদের সান্নিধ্য পেতে উপাচার্যের চরম কর্মব্যস্ত দিনগুলোতেও ক্লাস বিচ্ছিন্ন থাকিনি। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিক এবং একাডেমিক উৎকর্ষ সাধনে। আমি কায় মনোবাক্যে এই প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল কামনা করছি।’

Advertisement

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা লিখেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগার এবং সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণের যে গুরুদায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছিল তা আমি আমার সাধ্যের শেষ বিন্দু দিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি। সরকারের নিজস্ব সিসিটিভি ক্যামেরাসমূহ সব সময়ই আমাকে পর্যবেক্ষণ করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি পরম করুনাময় সদয় হলে সদাশয় সরকারের সেই সকল সিসি ক্যামেরার সারমর্ম আমাকে একদিন অবশ্যই মূল্যায়ণ করবে।’

এদিকে ইবির ১৩তম উপাচার্যের নিয়োগ পেতে মাঠে নেমেছেন প্রায় ডজন খানেক শিক্ষক। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়াও বাইরের কিছু শিক্ষকের নাম জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান দুই মেয়াদের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমান। তিনিসহ মেয়াদ পূর্ণ হওয়া উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ ১৩তম ভিসির পদ পেতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া উপাচার্য পদে চেষ্টা করছেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হাকিম সরকার, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নাসিম বানু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’বারের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার।

Advertisement

এদিকে ঢাকা, জগন্নাথ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ইবির উপাচার্য পদের জন্য চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। ইবির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও ঢাবির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আফজাল হোসেন, ইবির সাবেক শিক্ষক ও বর্তমানে জবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক শিক্ষক পিএম শফিফুল ইসলাম শফিকও ইবির উপাচার্য পদপ্রত্যাশী।

এছাড়া কোষাধ্যক্ষ হওয়ার দৌড়ে আছেন ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কাজী আখতার হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আনোয়ারুল হক স্বপন, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক সাইদুর রহমান ও আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মণ্ডল প্রমুখ।

এফএ/পিআর