জাতীয় সম্মেলনের আট মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের। কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দিয়েই বিগত আট মাস ধরে সংগঠন তিনটির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।
Advertisement
করোনাভাইরাসের কারণে মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের কার্যক্রমে এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের রেওয়াজ অনুযায়ী, শোকের মাস আগস্টে সাংগঠনিক তৎপরতা স্থবির থাকে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সংগঠন তিনটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখন অনেকটাই অনিশ্চয়তার মুখে।
সংগঠন তিনটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সম্মেলনের পরপরই প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য মূল দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে জমা দেয় কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন, সরকারের বর্ষপূর্তি, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যস্ততা এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিতে পর্যাপ্ত সময় পাননি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে শীর্ষ নেতারা আশা করছেন, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি সুবিধাজনক সময়েই অনুমোদন পাবে।
Advertisement
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংগঠন তিনটির কমিটি অনুমোদন বা সাংগঠনিক তৎপরতার চেয়েও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। একই সঙ্গে শোকের মাসে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন ও সাংগঠনিক তৎপরতা কিছুটা স্থির থাকে। শোকের মাস আগস্ট যাওয়ার পর করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, আগস্ট মাসটা আমাদের জন্য শোকের, খুব কষ্টের। এই সময়ে কোনো কমিটি বা কোনো ঘোষণা দেয়া হয় না। এগুলো আগস্ট মাসের পরে হবে ইনশাল্লাহ। ততদিনে করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমবে, আশা করি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আবদুর রহমান বলেন, এই করোনাকালে সাংগঠনিক অবস্থা বা কমিটি গঠন নিয়ে অতটা মনোযোগী আমরা নই। আমরা এখন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। করোনার আপৎকালীন সময় পার হওয়ার পরই এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করা যাবে।
দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, করোনার কারণে গত পাঁচ মাস ধরে সবকিছুই প্রায় স্থবির। জনজীবন বিপর্যস্ত, দেশ অচল প্রায়। এই অবস্থাতে সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও বাধাগ্রস্ত হয়। আমরা আশা করছি যে, করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরপরই আমাদের সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার হবে। সেই সময় যে সমস্ত কমিটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, সেগুলোর দ্রুত অনুমোদন দেয়া হবে।
Advertisement
গত বছরের ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কৃষক লীগের সম্মেলনে সমীর চন্দ্র চন্দ সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তিনদিন পর ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে ফজলুল হক মন্টু সভাপতি ও কে এম আজম খসরু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তার সপ্তাহখানেকের মাথায় ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে নির্মল রঞ্জন গুহ সভাপতি এবং এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সম্মেলনের পর নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এক মাসের মধ্যে প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এইউএ/এইচএ/এমএআর/জেআইএম