জাতীয়

ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা, খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র

ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত ১৭ পাহাড়ে ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে এসব পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরাতে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।

Advertisement

এছাড়া রেলওয়ের মালিকানাধীন কনকর্ড গ্রুপকে লিজ দেয়া ফয়েজ লেক সংলগ্ন অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি বসতি এবং এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরাতে সোমবার (১৭ জুলাই) দিনভর মাইকিং করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ জানিয়েছেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার প্রভাবে শনিবার গভীর রাত থেকেই চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়, আজ সোমবার সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের মত ঘটনা ঘটতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া নদী বন্দরে ১ নম্বর নৌ সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে করোনা মহামারির কারণে চলতি বছর চট্টগ্রাম নগরী ও সংলগ্ন এলাকার পাহাড়গুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমে ধীরগতি ছিল। তবে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভারী বৃষ্টির পর ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড সংলগ্ন পাহাড় কেটে গড়ে ওঠা চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। আজ ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নিতে নগরীর চাঁন্দগাও, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ এবং কাট্টলী ভূমি সার্কেলের অধীনে বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

Advertisement

আশ্রয়কেন্দ্রগুলো হলো- পাহাড়তলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্ব কলোনির কোয়াড পি-ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফিরোজ শাহ কলোনী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেটের বায়তুল ফালাহ আদর্শ মাদরাসা, চট্টগ্রাম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জালালাবাদ বাজার সংলগ্ন শেড, রউফাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, রশিদিয়া রউফাবাদ আলিম মাদরাসা, মহানগর পাবলিক স্কুল, আল হেরা মাদরাসা, আমিন জুট মিল ওয়ার্কার্স ক্লাব, আমিন জুট মিলস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লালখানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবাদ উল্লাহ পণ্ডিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কলিম উল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ওয়াইডব্লিউসিএ, শেখ রাসেল প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মতিঝর্ণা ইউসেফ স্কুল।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘নগরীর পাহাড়ি এলাকায় মানুষের জানমালের সুরক্ষায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। নগরীর ছয়টি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমন্বয় করে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় মসজিদ থেকেও মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোকজনকে নিরাপদ অবস্থানে আশ্রয় নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে-পরে এবং বৃষ্টির তীব্রতা অনুযায়ী মসজিদের মুয়াজ্জিনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে আহ্বান জানাচ্ছে।’

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের কথা বিবেচনায় রেখে এবার আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। ভূমি অফিসের কর্মচারী, কাউন্সিলরসহ স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নগরের ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে লোকজনকে অপসারণ করা হচ্ছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজন সরে গিয়ে তাদের নিকট আত্মীয়স্বজনের বাসায় আশ্রয় নিচ্ছে।’

Advertisement

আবু আজাদ/এএইচ/এমকেএইচ