সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে শান্তি চুক্তি করেছে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এবার এই দু'দেশের মধ্যে সরাসরি টেলিফোন সেবাও চালু হলো। ফলে এখন থেকে দু'দেশের মধ্যে সরাসরি টেলিফোন করা যাবে। খবর বিবিসির।
Advertisement
এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দু'দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির পর পরস্পর টেলিফোনে আলাপ করেছেন। তাকে একে অন্যকে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ওই চুক্তির বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এটা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে কোন আরব দেশের তৃতীয় শান্তি চুক্তি। আন্তর্জাতিকভাবে বেশিরভাগ দেশই এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে ফিলিস্তিন, ইরান এবং তুরস্ক এর নিন্দা জানিয়েছে।
ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম তীরে বিতর্কিত বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল।আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন যায়িদ আল-নাহিয়ানকে টেলিফোনের পর ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাবী আশকেনাজি রোববার টুইট করেছেন। তিনি বলেছেন, দু'পক্ষই নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সরাসরি টেলিফোনে যোগাযোগ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Advertisement
ইসরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের টেলিফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলের টেলিফোন কোড উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এজন্য তিনি আরব আমিরাতকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তার মতে, এতে অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং দু'দেশের স্বার্থ রক্ষায় এটি আস্থা তৈরি করার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটনে দু'পক্ষ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম এক দেশ আরেক দেশে দূতাবাস চালু করবে।
নতুন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অন্যতম নমুনা হিসেবে দু'দেশ শনিবার কোভিড-১৯ বিষয়ে যৌথ গবেষণা করার ব্যাপারে একটি সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছে। এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের কোন রকম কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু ইরানের বিষয়ে তাদের সবার উদ্বেগের কারণে অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রধান উপদেষ্টা জেয়ার্ড কুশনার যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য তিনি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাজ করছেন।
Advertisement
তবে এই চুক্তি ফিলিস্তিনি নেতাদের অবাক করে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের এক মুখপাত্র এই চুক্তিকে প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছেন।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে মাত্র দু'টি আরব দেশের সঙ্গে তাদের শান্তি চুক্তি হয়। ১৯৭৯ সালে মিসরের সঙ্গে এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডানের সঙ্গে। আরব লীগের অপর সদস্য দেশ মৌরিতানিয়ার সঙ্গে ১৯৯৯ সালে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক হয়েছিল তবে ২০১০ সালে তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আশা করেন আরো বেশি আরব এবং মুসলিম দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার পরিকল্পনা তিনি স্থগিত করেছেন, তবে এখনো তা আলোচনায় রয়েছে।
সংযুক্ত করা হলে পশ্চিম তীরের কিছু এলাকা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের অংশ হবে। যার ফলে ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব একটি দেশ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
টিটিএন/পিআর