রাজনীতি

যন্ত্রণায় কাতর বিএনপি

যন্ত্রনা যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে। হাইকমান্ড থেকে শুরু করে পুরো দলের বর্তমান অবস্থা যেন নিয়ন্ত্রণহীন। এরকম অচলাবস্থা নিরসনে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দিকেই তাকিয়ে আছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এদিকে, বুধবার হঠাৎ করে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান সমশের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগে যন্ত্রণার বোঝাটা ক্রমান্বয়ে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগেও বদরুদ্দোজা চৌধুরী, নাজমুল হুদা, কর্নেল অলি আহমেদসহ হেভি ওয়েট অনেক নেতাই বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে গেছেন। তবে সমশের মবিন চৌধুরী নতুন কোন দলে অংশ নেয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ দেখালেও এর আগে যারাই বিএনপি ছেড়েছেন তাদের বেশিরভাগ নেতাই নতুন দল তৈরি করেছিলেন। তবে সমশের মবিনের পদত্যাগের কারণে বিএনপিতে কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না বলে মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তারা এই ঘটনাকে স্বাভাবিক দৃষ্টিকোন থেকেই দেখছেন। তবে ভিতরগত ভাবে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘উনি তো আমাদের মতো তৃণমূল থেকে রাজনীতি করেননি। সারা জীবন সরকারি চাকরি করেছেন। অসুস্থ হলেও আমাদের মতো তো পারবেন না। জেল-মিথ্যা মামলায় মানসিক চাপের মধ্যে আছেন। চাপ ও অসুস্থতার জন্য হয়তো এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তিনি আরো বলেন, ‘জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার (সমশের মবিন) যোগাযোগও ছিল না। তার এ ঘোষণা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ছিল না। আমাদের নেতাকর্মীরাও এজন্য প্রস্তুত ছিলেন। এটা শকড না, বিস্ময়কর কিছু না।’তবে অবসরের কারণ সম্পর্কে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যে চিন্তাধারা ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটা গঠনমূলক রাজনীতির কথা ভেবেছিলেন, অনেকের মতো আমার মনেও প্রশ্ন বিএনপি সেখানে কতটুকু রয়েছে।এদিকে, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার পর থেকে দলটির দিনের পর দিন সরকারের কাছে তাদের অসহায়ত্ব নানাভাবে স্বীকার করছে। দাবি আদায়ে টানা তিন মাস আন্দােলন করে ব্যর্থ হওয়ার পর এখন সংবাদ সম্মেলন করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি তুলছে। বিএনপি একটি পক্ষ বলছে, যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হলে কেউ জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া এই দল ছেড়ে অন্য কোথাও যেতা না। কিন্তু ভয়াবহ এক সিন্ডিকেট বিএনপিকে এমনভাবে শেষ করেছে, ফের নতুন করে রাজপথে সক্রিয় হতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলের সব দুর্বলতা সম্পর্কে অবগত দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডনে অবস্থানরত বড় ছেলে দলটির সিনিয়ার ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে এ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করেছেন তিনি। এছাড়া সম্প্রতি দেশে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগে নাজেহাল দলের নেতাকর্মীরা।সূত্রটি জানিয়েছে, দেশে ফিরেই তিনি নানা রকম সিদ্ধান্তের মাধ্যমে চমক দেখাতে পারেন। নতুন করে বিএনপিকে ডেলে সাজিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠান সংগ্রামে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আর খালেদা জিয়ার চমকপদ সিদ্ধান্তের মাধ্যে গত ১০ বছর ধরে তৈরি হওয়া নানা যন্ত্রণার কিছুটি অবসান হবে বলেও আশায় বুক বেঁধে আছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এমএম/এসকেডি/এমএম

Advertisement