সম্প্রতি তেমন কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কাপ্তাই লেকের পানি ধীরে ধীরে কমছে। এতে জেগে উঠছে পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাঙামাটির মনোরম ঝুলন্ত সেতুটি। শুক্রবার হাল্কা বৃষ্টি হলেও তা লেকের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। বাড়েনি লেকের পানি। ঝুলন্ত সেতু ভেসে ওঠায় এখন সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করা যাচ্ছে। তবে টানা ও ভারি বৃষ্টিপাত হলে সেতুটি আবার তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন রাঙামাটি পর্যটন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলরা।কর্তৃপক্ষ জানায়, সদ্য বর্ষা মৌসুমে কাপ্তাই লেকে পানি বাড়ায় গত প্রায় তিন মাস যাবৎ ঝুলন্ত সেতুটি পানিতে ডোবা ছিল। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় হ্রদের পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে সেতুটি জেগে উঠছে। এদিকে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. আবদুর রহমান বলেন, সদ্য মৌসুমে কাপ্তাই লেকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পানি বাড়ে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় হ্রদে পানি কমতে শুরু করেছে। লেকে বর্তমানে পানির উচ্চতা ১০৫ এমএসএল। বৃষ্টিপাত একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে পর্যায়ক্রমে লেকের পানি কমতে থাকবে। রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, সম্প্রতি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ঝুলন্ত সেতুটি উপরে ভেসে উঠছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে গেলে কিছুদিনের মধ্যে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বর্তমানে সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করা গেলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। শুক্রবার হাল্কা বৃষ্টি হলেও তার কোনো প্রভাব পড়েনি। ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কাও নেই। পর্যায়ক্রমে শীত মৌসুম আসবে। এতে হ্রদের পানি কমে গেলে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হবে।তিনি আরও জানান, গত প্রায় তিন মাস যাবৎ ঝুলন্ত সেতুটি পানিতে ডুবে থাকলেও পর্যটকদের আগমণে আগ্রহ কমেনি। এখন বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমণ ঘটছে রাঙামাটিতে। বিশেষ করে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটন মোটেলে অতিথিদের ভিড় জমছে। ঝুলন্ত সেতুটি সবার কাছে দৃষ্টিনন্দিত। এর আগে সেতুটি জলমগ্ন থাকলেও সুবলং ঝরণা, কাপ্তাই লেকে নৌ-ভ্রমণ, চাকমা রাজার বাড়ি, রাজবন বিহার, ডিসি বাংলো, টুকটুক ইকো ভিলেজসহ বিভিন্ন দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্পট ও স্থাপনাগুলোতে আগত পর্যটকদের পাড়ি জমছে। উল্লেখ্য, সত্তর দশকের শেষের দিকে সরকার রাঙামাটি পার্বত্য জেলাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। পরে পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটকদের পারাপারের সুবিধায় দুটি পাহাড়ের মাঝখানে তৈরি করে রাঙামাটির আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি। এটি বর্তমানে দেশে-বিদেশে আকর্ষণীয় হয়ে ব্যাপক আকারে পরিচিতি পেয়েছে। ঝুলন্ত সেতুর পূর্বদিকে কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ জলরাশি এবং ছোট বড় বিস্তৃীর্ণ সবুজের পাহাড়মালা পর্যটকদের আনন্দ জোগায়। প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে রাঙামাটির দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতুটি উপভোগ করতে আগমণ ঘটে প্রচুর পর্যটকের। সেতুতে প্রবেশ মূল্য বিশ টাকা। সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমএএস/এমএম
Advertisement