পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি এবং অতি-দ্রুতগতিতে অনুমোদন দেয়ায় রাশিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ চিকিৎসকই দেশটির বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ পুশ করতে অস্বস্তি বোধ করছেন। দেশটির তিন হাজারের বেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর চালানো এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে শুক্রবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
Advertisement
রাশিয়া বলছে, বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম ভ্যাকসিনটি চলতি মাসের শেষের দিকে চলে আসবে। প্রথমে দেশটির চিকিৎসকদের মাঝে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।
১৯৫৭ সালে বিশ্বের প্রথম হিসেবে মহাকাশে পাঠানো সোভিয়েত ইউনিয়নের স্যাটেলাইট স্পুটনিকের নামে এই ভ্যাকসিনের নামকরণ করা হয়েছে স্পুটনিক-৫। করোনার এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় অনেক বিজ্ঞানী বলেছেন, জাতীয় সম্মানের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সুরক্ষা যাচাই ছাড়াই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে মস্কো।
ডক্টরস হ্যান্ডবুক নামের একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রাশিয়ার ৩ হাজার ৪০ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এই ভ্যাকসিন নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। শুক্রবার আরবিসি ডেইলি নামের একটি দৈনিক বলেছে, এই জরিপে দেখা গেছে- রাশিয়ার ৫২ শতাংশ চিকিৎসক ভ্যাকসিনটি নেয়ার জন্য প্রস্তুত নন। এছাড়া ২৪ শতাংশ বলেছেন, তারা ভ্যাকসিন নিতে রাজি আছেন।
Advertisement
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মাত্র এক পঞ্চমাংশ বলেছেন, তারা রোগী, সহকর্মী এবং বন্ধু-বান্ধবদের ভ্যাকসিনটি নেয়ার জন্য সুপারিশ করবেন। এই ভ্যাকসিন নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ায় অনেক রুশ নাগরিক খুব ভয়ে আছেন বলে ডক্টরস হ্যান্ডবুকের জরিপে উঠে এসেছে।
তবে জরিপে অংশ নেয়া কিছু চিকিৎসক বলেছেন, তারা সরকারের সঙ্গে একমত যে, বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ইর্ষান্বিত হয়ে ভ্যাকসিনের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে গত ১১ আগস্ট। তৃতীয় ধাপে হাজার হাজার মানুষের ওপর এই পরীক্ষায় সাধারণত ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা যাচাই করা হয়। নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য এ ধরনের পরীক্ষা অপরিহার্য বলে বিবেচনা করা হলেও রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং এটি তার এক মেয়ের দেহেও প্রয়োগ করা হয়েছে।
Advertisement
ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তা ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো।
এসআইএস/পিআর