ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে একটি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিতে বাদীর কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা না দেয়ায় মামলার সাক্ষীদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন এসআই হারুন। এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মামলার বাদী আছিয়া খানম। তিনি সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চান্দপুর গ্রামের মৃত আমীর খানের স্ত্রী।
Advertisement
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মে ও ২৯ মে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিবেশীর সঙ্গে আছিয়া ও তার স্বজনদের ঝগড়া হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে আছিয়া ও তার স্বজনদের মারধর করেন।
এ ঘটনায় ৩ জুন সদর থানায় একটি মামলা করেন মারধরের শিকার আছিয়া। মামলা করায় প্রতিপক্ষের লোকজন ৬ ও ৯ জুন আছিয়া ও তার ভাই রবিন আহমেদকে মারধর করে বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় ১৪ জুন থানায় আরেকটি মামলা করেন আছিয়া।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন মামলাটি তদন্তের জন্য এসআই হারুনকে দায়িত্ব দেন। পরে এসআই হারুন ১৫ জুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ভাঙচুরের আলামত জব্দ করেন। কিন্তু আসামিপক্ষের কাছ থেকে প্রভাবিত হয়ে এসআই হারুন আছিয়ার মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেননি।
Advertisement
তবে এসআই হারুন আসামিদের গ্রেফতারের কথা বলে আছিয়ার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ২৫ হাজার টাকা নেন। একপর্যায়ে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করার কথা বলে এক লাখ টাকা ঘুষ চান এসআই হারুন। টাকা না দিলে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবেন না বলে এসআই হারুন হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, সাক্ষীদের নিয়ে মামলা সংক্রান্ত জবানবন্দি প্রদান করার জন্য এসআই হারুনের কাছে গেলে আজ নয়; কাল বলে সময়ক্ষেপণ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুনরায় সাক্ষীদের নিয়ে থানায় গেলে এসআই হারুন সাদা কাগজে মামলার সাতজন সাক্ষীর স্বাক্ষর নেন।
আছিয়া খানম বলেন, এসআই হারুন এই মামলায় আমাকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। এখন সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেয়া সাদা কাগজ দিয়ে সাক্ষী ও আমার কোনো ক্ষতি ও হয়রানি করতে পারেন বলে আশঙ্কা করছি। তাই এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
তবে এসআই হারুনুর রশিদ বলেন, আমি সাক্ষীর জন্য তাদের ডেকে ছিলাম। সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়েছি। আর আসামি ধরার জন্য কোনো টাকা নেইনি এবং অভিযোগপত্র দেয়ার কথা বলে কোনো টাকাও চাইনি।
Advertisement
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগটি এখনও আমার কাছে আসেনি। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।
আজিজুল সঞ্চয়/এএম/পিআর