দেশজুড়ে

সাত মাসের সন্তানসহ পুকুরে ঝাঁপ দিলেন মা

সাত মাস বয়সী শিশুকন্যাকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মা আলেয়া বেগম (২৫)। বুধবার ভোরে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি প্রগতিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

Advertisement

খবর পেয়ে চিলাহাটি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ মা আলেয়া ও শিশুকন্যা মনি আক্তারের লাশ উদ্ধার করেছে।

তাদের ইভা আক্তার (১৩) ও বৃষ্টি আক্তার (৮) নামে আরও দুটি মেয়ে রয়েছে। তৃতীয় সন্তান মনি আক্তারের জন্মের পর থেকে হঠাৎ করে আলেয়া বেগমের মস্তিষ্কে সমস্যা দেখা দেয়।

প্রগতিপাড়ার বাসিন্দা টিটু জানান, তারা গরিব বিধায় গ্রামবাসী সাহায্য তুলে আলেয়ার চিকিৎসা করায়। এতে তার বেশ উন্নতি হয়। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক দিন ধরে পুনরায় মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটে। এতে আলেয়া বেগম বেশির ভাগ সময় পুকুরে নেমে শুধু গোসল করতো। তাকে পুনরায় চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য গ্রামবাসী অর্থ সংগ্রহ করছিল।

Advertisement

আলেয়ার বড় মেয়ে ইভা জানায়, মা’র মাথা নষ্ট হওয়ার পর রাতে ঘুম হতে উঠে মাঝে মাঝে বাইরে চলে যেত। তাকে আমরা ধরে ঘরে নিয়ে আসতাম। ঘটনার দিন ভোরে মা আমাদের ছোট বোন মনি আক্তারকে নিয়ে ঘুম থেকে উঠে বাইরে চলে যায়। ওই সময় ফজরের আজান হচ্ছিল। দীর্ঘ সময় ফিরে না আসায় আমি বাবাকে ডাক দেই।

বাবাসহ ঘরের বাইরে এসে খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে পুকুরপাড়ে গিয়ে মা ও ছোটবোনকে পানিতে ভাসতে দেখি।

গ্রামের সহিদুল ইসলাম বলেন, ঘুমের ঘোরে পুকুরে কি যেন পড়লো এমন শব্দ পেয়েছিলাম। এখন ধারণা করছি মস্তিষ্ক বিকৃত আলেয়া বেগম তার কোলের মেয়েকে নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মত্যা করেছে।

ইসমাইল হোসেন জানান, তাদের দুই মেয়ের পর একটি ছেলেসন্তানের জন্য আলেয়ার খুব শখ ছিল। কিন্তু তৃতীয় সন্তানটিও মেয়ে হয়। এরপর স্ত্রী পাগলের মতো হয়ে যায়। আমি গরিব মানুষ। গ্রামবাসীর সহায়তায় আমি রংপুরে নিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসা করি। এতে সে অনেকটা ভালো হয়। কিছুদিন থেকে তার মাথা পুনরায় পাগলের মতো হয়ে যায়। গ্রামবাসী আবার টাকা তুলে ব্যবস্থা করছিল চিকিৎসার জন্য।

Advertisement

চিলাহাটি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, ওই গৃহবধূ একটু পাগল টাইপের ছিল। কোলের সন্তান নিয়ে তার লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা করে দুপুরে মর্গে মা ও মেয়ের লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

জাহেদুল ইসলাম/এমএএস/পিআর