বিশেষ প্রতিবেদন

সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ব্রিগেডিয়ার মান্নান

সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নড়াইলের নড়াগাতি গ্রামের এক সেনা কর্মকর্তা। যশ, খ্যাতি, পদের গর্ব কোনো কিছুই তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। সদালাপী ও বিনয়ী একজন মানুষের নাম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. আব্দুল মান্নান। তিনি সামরিক হাসপাতালের একজন অর্থপেডিক সার্জন।গত প্রায় একদশক ধরে তিনি তার জন্মভূমির ধনী-গরিব সকলকে পারিশ্রমিক ছাড়াই চিকিৎসা সেবা দিয়ে এলাকার মানুয়ের কাছে গরিবের বটবৃক্ষ নামে অধিক পরিচিতি পেয়েছেন। কৃষক পিতার সন্তান হলেও তিনি স্থাপন করেছেন চিকিৎসা সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ছুটি পেলেই তিনি ছুটে আসেন পৈত্রিক ভিটায়। বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দেন কালিয়া তথা নড়াইলের অনাথ ও গরিবসহ সকল শ্রেণির মানুষের।তার বাড়ি আসার খবর রাখেন এলাকার মানুষ। খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে চারিদিক থেকে রোগীরা ছুটে আসতে শুরু করেন। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলে তার রোগী দেখাসহ ছোটখাটো অপারেশন কাজ।টুল আর বেঞ্চিতে বসেই নাওয়া-খাওয়া ভুলে গভীর রাত পর্যন্ত রোগীদের মাঝে হারিয়ে যান সকলের মান্নান ভাই। সম্প্রতি তিনি ছুটিতে এসেছিলেন গ্রামের বাড়িতে। তার সঙ্গে কথা হয় নড়াগাতি বাজারের একটি হোমিও প্যাথিকের দোকানে। ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে ৯টা ছুইছুই করছে। তখনো তার চারপাশে রোগীদের ভিড়ে ঠাঁসা।রোগী দেখার ব্যস্ততার মাঝেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। কতক্ষণ রোগী দেখবেন জানতে চাইলে তিনি একটু মুচকি হেসে বললেন, যতক্ষণ রোগী আছে ততক্ষণ আমি আছি।বাঐসোনা গ্রামের আবুল খায়ের মোল্লা (৮০), জয়নগর গ্রামের রইসদ্দিন চৌধুরী (৬৫), মহাজন গ্রামের রহিমা বেগমসহ (৫০) অনেক রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মান্নানের কাছে এলাকার মানুষ বিনা পয়সায় চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।নিতান্ত গরিব রোগীদের তিনি ওষুধ দেয়াসহ বিনা খরচে অপারেশনও করে থাকেন। তারা আরো জানান, শুধু বাড়িতেই নয় তার কর্মস্থল ঢাকাতেও কালিয়ার অনেক রোগীকে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে থাকেন। সে কারণেই এলাকার মানুষ তাকে গরিবের বটবৃক্ষ বলে খেতাব দিয়েছেন।হাফিজুল নিলু/বিএ

Advertisement