অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণ ও রুপার দামে বড় পতন হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) স্বর্ণের দাম প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ এবং রুপার দাম প্রায় ৮ শতাংশ কমেছে। সম্প্রতি একদিনে এত বড় পতনের মধ্যে আর পড়েনি স্বর্ণ ও রুপা।
Advertisement
স্বর্ণ ও রুপার এমন দুঃসময়ে তেজি হয়ে উঠেছে তেলের বাজার। অপরিশোধিত তেলের দাম ২ শতাংশের ওপর এবং ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম দেড় শতাংশের ওপর বেড়েছে। এতে প্রায় পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে তেলের দাম।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। দফায় দফায় দাম বেড়ে গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৪ ডলারে উঠে যায়।
গত শুক্রবার থেকে পতনের কবলে পড়ে উড়তে থাকা স্বর্ণের দাম। ওই দিন ৩৪ দশমিক ১০ ডলার কমে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৪ দশমিক ৮০ ডলারে নেমে আসে। এরপর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবারও স্বর্ণের দরপতন হয়। এদিন প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৬ ডলার কমে যায়। মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১০ ডলার কমে।
Advertisement
বিশ্ববাজারে লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণের দরপতন বাড়তে থাকে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৮৫ ডলার কমে ১ হাজার ৮৪৪ ডলারে নেমে গেছে। এই দরপতনের ফলে একদিনেই স্বর্ণের দাম ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ কমে গেল। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমল ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এখনো মাসের ব্যবধানে ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং বছরের ব্যবধানে ৩০ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি রয়েছে স্বর্ণের দাম।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে রুপার দামেও বড় উত্থান হয়। গত সপ্তাহে রুপার দাম বেড়ে ২০১৩ সালের মার্চে পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। প্রতি আউন্স রুপার দাম ২৮ দশমিক ২৬ ডলারে পৌঁছায়। স্বর্ণের মতো রেকর্ড দামে পৌঁছে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস থেকে রুপার দামেও পতন শুরু হয়। গত শুক্রবার বিশ্ববাজারে রুপার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ দরপতন হয়। দরপতনের এই ধারা চলতি সপ্তাহেও অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে প্রতি আউন্স রুপার দাম দশমিক ১৮ ডলার বা দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে। সময়ের সঙ্গে রুপার দরপতনও বড় হতে থাকে। ইতোমধ্যে ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স রুপার দাম ২৬ ডলারে নেমে এসেছে। এই দরপতনের পরও সপ্তাহের ব্যবধানে এখনো রুপার দাম ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি রয়েছে। পাশাপাশি মাসের ব্যবধানে ৪৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং বছরের ব্যবধানে ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে রুপা।
স্বর্ণ ও রুপার দরপতনের মধ্যে বাড়ছে তেলের দাম। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরপতনের কারণে গত ২০ এপ্রিল প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ঋণাত্মক ৩৭ ডলারের নিচে নেমে যায়। রেকর্ড এই দরপতনের পরই অবশ্যই তেলের দাম বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহ শেষে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৪১ ডলার। গতকাল ও আজ দাম বেড়ে তা ইতোমধ্যে ৪২ দশমিক ৬৬ ডলারে উঠেছে। এর মধ্যে আজ বেড়েছে দশমিক ৭২ ডলার বা ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং মাসের ব্যবধানে ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ বাড়ল, যা পাঁচ মাসের মধ্যে তেলের দামকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
Advertisement
অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি বড় দাম বেড়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের। আজ প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম দশমিক ৭৭ ডলার বেড়ে ৪৫ দশমিক ৭৬ ডলারে উঠেছে। এতে একদিনে দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ৭০ এবং মাসের ব্যবধানে ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এমএএস/এমএসএইচ/এমএস