স্বাস্থ্য

হাসপাতালে রোগী কমেছে, করোনা রোগী কি আসলেই কমেছে?

ঈদুল আজহার পর দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে নাকি কমছে? অনেকের মুখে এখন এমন প্রশ্ন ফিরছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমেছে। সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তিও কমছে বলে তার দাবি।

Advertisement

কিন্তু রোগতত্ত্ববিদরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, ঈদ-পরবর্তী রাজধানীসহ সারাদেশের সব বিভাগের অন্তত ৪০ জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বনিম্ন ৫০ জন থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে রাজধানী ঢাকায়

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন জাগো নিউজকে জানান, গত ৫ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঈদের পরে ছয়দিনে রাজধানীতে সর্বোচ্চসংখ্যক (কমপক্ষে ১০ হাজার) রোগী বেড়েছে। এছাড়া দেশের ৬০ শতাংশ জেলায় কমপক্ষে ৫০ জন করে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। যেসব জেলায় রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল সেসব জেলায়ও রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

দেশে করোনা রোগী কমেছে নাকি বেড়েছে– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুশতাক বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে কি-না তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমেছে। সিংহভাগ রোগী এখন বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে করোনায় মোট মৃতদের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাসায় মৃত্যুবরণ করছেন।

Advertisement

করোনার সংক্রমণ কমাতে হলে কী করণীয়– জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে না এসে বাসায় চিকিৎসা গ্রহণ করলে ক্ষতি নেই। তবে বাসায় তাদের আইসোলেশনে থাকতে হবে। পরিবারের অন্য সদস্যদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। প্রয়োজনে দরিদ্রদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তারা বাইরে ঘুরে বেড়ালে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে।

মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনের (বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু) তথ্য তুলে ধরে বলেন, সোমবার (১০ আগস্ট) পর্যন্ত দেশের অঅট বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৫ দশমিক ৫, খুলনা বিভাগে ৭ দশমিক ১, সিলেট বিভাগে ৩ দশমিক ২, রংপুর বিভাগে ২ দশমিক ৭, বরিশাল বিভাগে ২ দশমিক ৫ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ দশমিক ৯ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আজ পর্যন্ত ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫০৩ জনের। গত ১৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৭১ জনে।

Advertisement

এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ