`প্রায় ২০ বছর তাকি অউ জায়গা দখল আছিল। মনো করছিলাম আর কোনো দিন উ বোধঅয় ই জায়গা দখলমুক্ত অইতো নায়। আইজ অতদিন পরে জায়গা উদ্ধার অওয়ায় ভালা লাগের, অখন ইকানো বাউন্ডারি ওয়াল দেওয়া দরকার।’ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টায় সিলেট নগরীর জল্লারপাড় চাহন ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি নিজাম উদ্দিন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জল্লারখাল দখলমুক্ত করতে অভিযান চালায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন। অভিযানকালে দেখা যায়, প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের এবং ১২ ফুট প্রস্থ জায়গা দখল করে নগরের একটি স্বনামধন্য মিষ্টির দোকানের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। মিষ্টির কারখানাই শুধু নয়, একই লাইন ঘেঁষে কেউ জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন গরুর খামার, কেউ করেছেন টিনশেডের কলোনি, কেউবা ব্যাচেলর নিবাস, আধাপাকা ঘর, টয়লেটসহ সীমানা দেয়াল। সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, এই এলাকায় শেফালী বেগম ও ফারহানা ইয়াসমিন গং পূর্বে ৬৭ ফুট দৈর্ঘ্যে ও ৬ ফুট প্রস্থে এবং দক্ষিণে ১০৩ ফুট দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ৭ ফুট জায়গা জবর দখল করেছিলেন। আনোয়ার বকস ১০০ ফুট দৈর্ঘের এবং ১২ ফুট প্রস্থ জায়গা জবর দখল করে রেখেছিলেন। একইভাবে সাবের খান দৈর্ঘ্যে ৩০ ফুট ও প্রস্থে উত্তরে ৩ ফুট-দক্ষিণে ৮ ফুট, ফয়জুল হোসেন মিনা মিয়া দৈর্ঘ্যে ৩৩ ফুট ও প্রস্থে উত্তরে ৮ ফুট-দক্ষিণে ১১ ফুট, তফজ্জুল হোসেন দৈর্ঘ্যে ৩১ ফুট ও প্রস্থে ১১ ফুট, শাফি মিয়া দৈর্ঘে ৭৬ ফুট ও প্রস্থে ১১ ফুট, মীর হোসেন দৈর্ঘ্যে ৫৭ ফুট ও প্রস্থে ১২ ফুট, লাল মিয়া দৈর্ঘ্যে ৬২ ফুট ও প্রস্থে ১২ ফুট জায়গা জবর দখল করে রেখেছিলেন। এসব জায়গা দখলমুক্ত করতে দিনব্যাপি অভিযানকালে অবৈধভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে জায়গা দখলমুক্ত করতে সমর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব। এনামুল হাবীব জাগো নিউজকে জানান, এসব জমি দখলমুক্ত করে চারিদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, এই জায়গায় যাতে একটি দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং লেক তৈরির চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। অভিযানকালে স্থানীয় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করায় তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।এনামুল হাবীব জানান, জল্লারখালের পর তালতলা অভিমুখে প্রবাহমান বলরামের খালটিও উদ্ধারে নামবে সিটি কর্পোরেশন।প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নুর আজিজুর রহমান জানান, জল্লারখালের সঙ্গে জিন্দাবাজার থেকে প্রবাহিত ছড়া এবং তালতলা দিয়ে প্রবাহমান বলরামের খালের সংযোগ স্থাপন করা হবে। এ জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এই কাজটি সমাপ্ত হলে এই এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে।অভিযানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিলেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিরর সাংবাদিক রেজওয়ান আহমদ, সহকারী প্রকৌশলী শামসুল হক, বিজিত দাশ প্রমুখ।ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআইপি
Advertisement