আন্তর্জাতিক

হৃদরোগীদের জন্য করোনা কতটা বিপজ্জনক?

গোটা বিশ্বেই এক আতঙ্ক তৈরি করে রেখেছে করোনাভাইরাস। কয়েক কোটি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যেই কয়েক লাখ মানুষ প্রাণও হারিয়েছে। ফলে চারদিকেই করোনার কারণে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে।

Advertisement

সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস হৃদরোগীদের জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। সে কারণে যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন তাদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে।

আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ কোভিড রোগীদের মধ্যে যেখানে মৃত্যুহার ২ দশমিক ৩ শতাংশ, হৃদরোগ আছে এমন কোভিড রোগীর ক্ষেত্রে তা ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার ১১টি দেশের ১৬৯টি হাসপাতালে ভর্তি ৮ হাজার ৯১০ জন রোগীর ওপর সমীক্ষা চালিয়ে বোস্টনের ব্রিগহাম ও ওমেন্স হাসপাতালের চিকিৎসকরা দেখেছেন, এদের মধ্যে যে ৫১৫ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ছিলেন বয়স্ক ও হৃদরোগীরা।

Advertisement

৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে মৃত্যুহার ১০ শতাংশ। বয়স বেশি নয় কিন্তু করোনারি আর্টারি ডিজিজ আছে এমন রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ১০ দশমিক ২ শতাংশ, হৃদরোগীদের ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং অ্যারিদমিয়ার রোগীদের মধ্যে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।

এ সম্পর্কে আরও তথ্য দিয়েছে জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। চীনের একটি হাসপাতালে গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, হৃদরোগ আছে এমন কোভিড রোগী যাদের রক্তে ট্রোপোনিন লেভেল বাড়েনি তাদের মৃত্যুহার ১৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে যাদের ট্রোপোনিন বেড়ে গেছে তাদের মৃত্যুহার ৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে। ট্রোপোনিন হলো এক ধরনের কার্ডিয়াক এনজাইম। এই এনজাইমের মাত্রা হৃদপিণ্ডের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। অর্থাৎ কোভিডের প্রভাবে হার্টের ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।

জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত প্রবন্ধে জানানো হয়েছে, রেসপিরেটরি ভাইরাস বলে করোনা ফুসফুসের উপরই বেশি আক্রমণ করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই বোঝা যাচ্ছে যে, রোগ জটিল হতে শুরু করলে তার প্রভাব শরীরের সব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ওপরই পড়ে।

এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে ফুসফুসে জটিলতা দেখা দেওয়ার আগেই হৃদযন্ত্র আক্রান্ত হয়। আগে থেকে হৃদরোগ থাকলে করোনায় সমস্যা আরও বেশি ভয়াবহ হতে পারে। যাদের হৃদযন্ত্র দুর্বল, তাদের ক্ষতিও বেশি হতে পারে। ভাইরাস যদি হৃদযন্ত্রের পেশিতে সংক্রমণ ছড়ায় তবে একে বলা হয় ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস। এক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়।

Advertisement

টিটিএন/জেআইএম